নির্বাচন শেষে স্বৈরশাসন গেড়ে বসার শঙ্কায় বাংলাদেশ
2023.11.22
গত সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দেশটিকে একটি গুরুতর অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দিয়েছে।
রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করে বিরোধী দলকে দমন করে নির্বাচনের আগে ক্ষমতায় নিজের নিয়ন্ত্রণ মজবুত করার চেষ্টায় আছে শাসক দল আওয়ামী লীগ। অপরদিকে, লাগাতার নির্যাতনের মুখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন বিরোধী দল।
এখন পর্যন্ত এটি স্পষ্ট নয় যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দল আগের দুটি নির্বাচনের মতো এবারও জোর করে নির্বাচন আয়োজন করে ফেলতে পারবেন কিনা কিংবা বিরোধী দলগুলো এই একতরফা মহড়া থেকে সরকারকে বিরত রাখতে পারবে কিনা।
এবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একটি পরিচিত স্মৃতি মনে উঁকি দেয় – স্মরণ করিয়ে দেয় ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট যেটি বিরোধী দলগুলো বর্জন করেছিল।
নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের বর্ণনায় মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ওই নির্বাচনে অর্ধেকেরও বেশি আসনের ফলাফল ভোটগ্রহণের আগেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। যার মধ্য দিয়ে কার্যত বাংলাদেশে একটি একদলীয় সংসদের আবির্ভাব ঘটে।
ওই অধ্যায়ের সঙ্গে ২০১৮ সালের প্রেক্ষাপটের মৌলিক তেমন তফাৎ দেখা যায় না। বিরোধীরা সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা ও আমলাদের সাথে একজোট হয়ে নির্বাচন কমিশন একটি কারসাজির নির্বাচন মঞ্চস্থ করে, যার মাধ্যমে এক অভাবনীয় বিজয় পায় আওয়ামী লীগ। শাসক দল ও দলটির মিত্ররা সংসদের ৯৫ শতাংশের বেশি আসন দখলে নেয়।
এই নির্বাচনের আগের কয়েক মাস ধরে বিরোধী দলগুলোর উপর নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাতে এবং নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটবক্স ভরানোর কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল রাষ্ট্রব্যবস্থাকে। ফলে ভোটকেন্দ্র থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল সাধারণ ভোটারদের, কারণ তাদের ভোট আগেই অন্য কেউ দিয়ে রেখেছে।
২০১৪ ও ২০১৮ সালের ওই দুই নির্বাচন শুধু দেশের আইনসভাকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থই করে ফেলে, তা নয়। এই নির্বাচনের কারণেই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল স্তরের উপর শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
তবে এই দুই নির্বাচন কোনো বায়বীয় প্রেক্ষাপটে ঘটেনি।
১৯৯১ সালে গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশের যেই সম্ভাবনাময় যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২০০৭ সালে এসে তা ধাক্কা খায়। ওই বছর সামরিক বাহিনী এক নমনীয় অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দুই বছর দেশ শাসন করে।
২০০৮ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হয় আওয়ামী লীগ। তিন বছর পর সংসদে নিজেদের একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে দলটি সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকেই সংবিধান থেকে সরিয়ে ফেলে। এভাবে শুরু হয়েছিল দেশের উল্টো পথ যাত্রা, যার ফলশ্রুতিতে আজকের নির্বাচনী স্বৈরাচার। প্রহসনের বিষয় হলো, ১৯৯৬ সালে রাজপথে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নিরন্তর আন্দোলনের কারণেই তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজিত হয়েছিল।
বাংলাদেশের ঘটনাবহুল ইতিহাসে ১৯৭৩ সালের প্রথম নির্বাচন থেকে শুরু করে কোনো আমলেই ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এই পাইকারি কারচুপির বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই একমাত্র রক্ষাকবচ হিসেবে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
২০১৪ সালে এই ব্যবস্থা পুনঃঅন্তর্ভুক্ত না করা হলে নির্বাচন বর্জনের হুমকি দেয় বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল। দলগুলো তাদের হুমকিতে শেষ পর্যন্ত অটুট থাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নির্বাচনের পথেই এগিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত, সংসদের বৈধতার ঘাটতি থাকলেও দলটি পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করে।
তারপর ২০১৮ সালে কারসাজির নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সবচেয়ে দীর্ঘকালীন সরকার প্রধানে পরিণত হন। ওই নির্বাচনের আগে তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া — যিনি তখন পর্যন্ত তিনবার নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড ধরে রেখেছিলেন — তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় অস্পষ্ট অভিযোগে। আর এই পুরো প্রক্রিয়াতেই ছিল প্রতিহিংসার আঁচ।
ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের পাশাপাশি, শেখ হাসিনার ধারাবাহিক শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে খর্ব করা হয়েছে, আইন ও আইন-বহির্ভূত কায়দায় সমালোচকদের স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সুশীল সমাজকে অত্যন্ত উদ্দেশমূলকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলোকে সমাবেশের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে একের পর এক মামলা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রায়শই এগুলোকে ‘গায়েবি মামলা’ বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। কারণ, মামলায় যেসব কথিত অপরাধের বিবরণ থাকে, সেগুলোতে অভিযুক্তদের কারো কারো পক্ষে জড়িত থাকা অসম্ভব — কেননা তারা হয় ছিলেন মৃত, অসুস্থ কিংবা বিদেশে বসবাসরত।
এই সবকিছুই দেশে বিরাজমান ভয়ের সংস্কৃতিকে আরও পোক্ত করেছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতি
২৮ অক্টোবর দিনটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি মোড় ফেরানো দিন। ওই দিন ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ পুর্বপরিকল্পিত পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে পণ্ড করা হয়, যা ছিল বিরোধীদের উপর আরও ব্যাপকহারে দমনপীড়নের পূর্বাভাস।
সমাবেশের দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিচ্ছিন্ন কিছু সহিংসতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে সরকারি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে, শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ১০ হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। দলটির প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে বিএনপি ও দলটির মিত্ররা দেশজুড়ে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দেয়।
আর দেশে হরতাল ও অবরোধ চলমান সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। প্রত্যাশিতভাবেই, বিএনপি সহ দেশের নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৭টি দলই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। মাত্র ১৫টি দল তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যান্য ১২টি দল এখনও কোনো প্রকাশ্য অবস্থান নেয়নি। নিবন্ধিত দলগুলোর বাইরে অনেক রাজনৈতিক দল বা সংগঠন, যারা জনমত সংগঠিত করার ক্ষমতা রাখে, তারাও তফসিলের বিরোধী।
একটি নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের পথ তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবি থেকেই তারা তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।
দাবিটি নতুন নয়। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বিলুপ্ত করার পর থেকেই বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলি এই দাবি অব্যাহত রেখেছে।
তবে এখন যেটা ভিন্ন তা হলো, আগের দুটি জাতীয় নির্বাচন ও বিগত বছরগুলোতে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের ব্যাপক কারচুপির ঘটনা বিএনপির অবস্থানকে যথাযথ প্রমাণ করেছে। এ নিয়ে এখন কোনো সংশয় নেই যে, বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সমান সুযোগের পরিবেশ নেই এবং রাষ্ট্রযন্ত্র বস্তুত ক্ষমতাসীন দলের সম্প্রসারিত অংশের মতো আচরণ করে।
এর ফলে নির্বাচন তত্ত্বাবধানে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ বাংলাদেশী উত্তরদাতা বলেছেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তদুপরি এবারের নির্বাচনের উপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীক্ষ্ম নজর রয়েছে — বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে, যারা গত দুই বছর ধরে বারবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চাপ দিয়েছে।
একটি বড় খেলার অংশ?
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে আসছে। শেখ হাসিনা বারবার সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সন্তুষ্ট হয়নি।
একটি অবাধ নির্বাচনের প্রতি সমর্থনের প্রতীক হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মে মাসে একটি ভিসা নীতি ঘোষণা করে। বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্রকে দুর্বল করার জন্য কাজ করছে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার হুমকি দেয় দেশটি। গত এক বছর ধরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বাংলাদেশ সরকারকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পথে আনতে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
অপরদিকে ভারত — যেই দেশটিকে ভাবা হয় বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ছোটো দেশগুলোর বিষয়ে মার্কিন নীতির প্রতিনিধি — তারা ২০০৯ সাল থেকেই শেখ হাসিনা সরকারের কট্টর সমর্থক। দেশটি এমনকি বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে নিজের স্বার্থের প্রবেশ ঘটিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে চীন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। দেশটি এখন হাসিনা প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। এমনকি ভারতের পক্ষেও তা ঠেকানো সম্ভব হয়নি। বৈশ্বিক মেরুকরণের অংশ হিসেবে রাশিয়াও হাসিনা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এসব টানাপোড়েন এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার একটি অংশ।
এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে?
বর্তমানে বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতাদের বেশিরভাগই হয় গ্রেপ্তার হয়ে আছেন অথবা আত্মগোপনে আছেন। এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু গত ১৩ নভেম্বর বাংলাদেশের তিনটি প্রধান দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে বিদ্যমান অচলাবস্থা নিরসনের জন্য সংলাপ করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠান।
কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে দেয়। এর মাধ্যমে মূলত আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার সকল সম্ভাবনা বন্ধ করে দেয়া হয়, যা থেকে এটি বরং আরও স্পষ্ট হলো যে কমিশন অনেকটা সরকারের নির্দেশে কাজ করছে।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি মেনে নেওয়া দূরের কথা; ক্ষমতাসীন দল স্পষ্টতই বিরোধী দলকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে দিয়ে নির্বাচন করে ফেলতে চায় – যেন তারা চাইলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে।
সামনের কয়েক সপ্তাহে বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করা হবে। একদিকে দমন-পীড়নের পরিবেশ ঘনিভূত হওয়া, অন্যদিকে সহিংসতার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের কঠোর বার্তা — বিরোধী দলের সামনে এখন আন্দোলন গড়ে তোলার দুঃসাধ্য চ্যালেঞ্জ।
আওয়ামী লীগ দৃশ্যত বাজি ধরছে যে, যদি একটি একতরফা নির্বাচন পুনঃমঞ্চস্থ হয়, তাহলে ঐক্যহীন বিরোধী দলগুলোর পক্ষে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। দলটির বিশ্বাস, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তাদের নেওয়া বিভিন্ন কৌশল সমন্বয়ের মাধ্যমে — অর্থাৎ বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে কিছু নবগঠিত ‘কিংস পার্টি’কে অংশগ্রহণ করানোর মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে।
তবে এটিও সত্য যে, জনগণের মধ্যে একটি অবাধ নির্বাচনের তাগিদ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার বেশি। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি, চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের জোরাজুরির কারণে ২০১৪ বা ২০১৮ সালের তুলনায় নির্বাচনের উপর আন্তর্জাতিক নজরদারিও এবার অনেক ব্যাপক।
এখন প্রশ্ন হলো, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় “সম্ভাব্য বিপর্যয়” প্রতিরোধে সক্রিয় হবে কিনা।
বৈশ্বিক শক্তিগুলোর বোঝার সময় এসেছে যে আসন্ন নির্বাচন হতে পারে বাংলাদেশের সবচেয়ে সুদূরপ্রসারী নির্বাচন এবং দেশটির স্বৈরাচারী পথযাত্রা উল্টে দেওয়ার শেষ সুযোগ।
আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একজন ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর ও আটলান্টিক কাউন্সিলের একজন অনাবাসী জ্যেষ্ঠ ফেলো। এই লেখায় প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। এই নিবন্ধে ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটি, আটলান্টিক কাউন্সিল বা বেনারনিউজের দৃষ্টিভঙ্গির কোনো প্রতিফলন নেই।