কারা এই আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি?
2017.09.01
আবারও আলোচনায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহ।
মিয়ানমার যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের পথে, ঠিক সে সময় অর্থাৎ ২০১২ সালে মিয়ানমারে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা ও মুসলিম বিরোধী সহিংসতার ঘটনা ঘটে। যদিও সেবারকার মাত্রা অত তীব্র ছিল না। বলতে গেলে, সেই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ হওয়ার সুযোগই করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আং সান সুচির নতুন গণতান্ত্রিক সরকারকে সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা করছিল।
বছরের পর বছর ধরে মিয়ানমারে পদ্ধতিগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে আসছিল। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি বা আইনগত সুরক্ষা নেই, সরকার তাদের কাজ পাওয়ার অধিকার, খাদ্যের অধিকার বা চিকিৎসার অধিকার সংকুচিত করে রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটে সেখানে পুরো মাত্রায় বিদ্রোহ দেখা দেবে সেটাই স্বাভাবিক।
২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বিদ্রোহ ছিল একবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। হারাকাহ আল ইয়াকিনের প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মা জুনুনি মিয়ানমারে ফিরলে বিদ্রোহ শুরু হয়। বাড়ি মিয়ানমারে হলেও আতাউল্লাহর জন্ম পাকিস্তানে, বড় হয়েছেন সৌদি আরবে।
বিদ্রোহী এই গোষ্ঠীটি জনসমক্ষে নিজেদের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশ আর্মি নামে পরিচয় দিয়ে থাকে। ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট হামলাও চালাতে শুরু করে তারা। অন্যদিকে রাখাইনে বেশিরভাগ সহিংসতা ঘটায় সরকারি সমর্থনপুষ্ট স্থানীয় কিছু লোকজন। এদের দায়িত্ব ছিল নজরদারি করা, যাদেরকে কখনই মিয়ানমার সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেনি।
তবে নিঃসন্দেহে আরসা ওই এলাকার কিছু সহিংস ঘটনার জন্য দায়ী। সুস্পষ্টভাবেই কঠোরভাবে এর জবাব দেওয়া হয়েছে। গতবছরের অক্টোবরে আরসা চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায়।
জবাবে সরকার পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালায়, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে ও রোহিঙ্গা গ্রামগুলোয় আগুন ধরিয়ে দেয়। জাতিসংঘের হিসেবে গত বছর অক্টোবর-নভেম্বরে ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় ঢুকে পড়ে। আগে থেকেই এ অঞ্চলে ছিল আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা।
গত মাসের শেষের দিকে, জাতিসংঘের বিশেষ দূত কফি আনান এক কোটি দশ লাখ রোহিঙ্গার ওপর মিয়ামনার সরকারের অন্যায় আচরণের অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিবেদন পেশ করার দুই দিনের মাথায় রাখাইনে ২৪ থেকে ৩০টি নিরপত্তা চৌকিতে দেড়শ আরসা জঙ্গি হামলা চালায়। হামলার দায় স্বীকার করে আরসা দাবি করে, তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আত্মরক্ষার জন্য ওই হামলা চালিয়েছে।
অপরিকল্পিতভাবে চালানো ওই হামলা বিফলে যায়। ওতে আরসার ৭৭ জন নিহত হবার বিপরীতে নিহত হন মাত্র এক ডজন পুলিশ। ওই হামলা সফল হওয়ার জন্য পরিচালিত হয়নি, বরং কৌশলগত বিজয়ই ছিল এ হামলার লক্ষ্য।
আরসা খুব ভালোভাবেই জানত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কীভাবে ওই হামলার জবাব দেবে। তারা চূড়ান্ত শক্তিপ্রয়োগ করে এবং মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করে একটি ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালাবে এটাই অনুমেয় ছিল। ফলে ২৮ আগস্টের মধ্যে মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১০৪ এ।
কয়েক দিনের মাথায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সীমান্তের কাছে নো ম্যানস ল্যান্ডে আটকা পড়ে আরও প্রায় ২০ হাজার মানুষ। এর আগে ছয় হাজার মানুষের ওপর গুলি চালায় সামরিক বাহিনী। ওই মানুষগুলো সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করেছিল। তাদের বেশিরভাগই আবার ছিল নারী ও শিশু।
মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত ছিলেন এমন অনেকে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। ২৫ আগস্টের পরবর্তী চারদিনে যত গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া হয়, সংখ্যার দিক থেকে তা গতবছরের অক্টোবর-নভেম্বরের চেয়েও বেশি ছিল। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাই বলছে।
তাদের কি কোনো বিকল্প ছিল?
সরকারের এই অবমাননাকর নীতি আরসার সদস্য সংখ্যা আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চরমপন্থী সংগঠনগুলো এই ভবিষ্যদ্বাণী করে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছে।
আরসা গঠিত হয়েছে তিন বছর আগে। আকারে ছোট ও স্বভাবে চরমপন্থী হওয়ায় দলটির প্রতি খুব কম মানুষেরই সমর্থন ছিল। পাগল না হলে কারো এই ছোট ও অভাবী দলকে সমর্থন করার কথা নয়। কারণ দলটিকে দাঁড়াতে হবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। এই সেনাবাহিনী পৃথিবীর ১১ তম বৃহত্তম বাহিনী এবং বহু বছর ধরে নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা জারির ইতিহাস আছে এটির।
আইনানুগ কোনো বিকল্প না থাকায়, অনেকেই মনে করেন তাঁরা বাধ্য হয়ে আরসায় যোগ দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের একটি গ্রামের নেতা বলেন, ত্রিশজন যুবক স্বেচ্ছায় আরসায় যোগ দিয়েছে।
“তাদের হাতে কি অন্য কোনো বিকল্প আছে? তারা ভেঁড়ার মতো জবাই না হয়ে লড়াই করে মরতে চেয়েছে।”
বাংলাদেশের এঁদো পুতিগন্ধময় শরণার্থী শিবিরে এখন আরসায় যোগ দেওয়াটা ফরজ, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাধ্যতামূলক।
গত আগস্টে আরসা সমর্থনকারী ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিওগুলো প্রচারিত হয়েছে সেগুলো মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর চালানো চূড়ান্ত বর্বরতার সাক্ষ্য দিচ্ছে।
নোবেল জয়ী আং সান সুচির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আরসাকে ‘চরমপন্থী বাঙালি সন্ত্রাসী’ বলে চিহ্নিত করেছে। কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন আরসা একটি ‘ইসলামিক স্টেট’ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দলটির জন্ম সৌদি আরবে ও নামটি আরবি হওয়ার কারণে ২০১৭ সালে তারা নিজের নামকরণ করে আরসা।
‘অমানবিক নির্যাতন’ এর মুখে যুদ্ধ
১৮ আগস্টের ভিডিও বার্তায় আতাউল্লাহ আবু আম্মা জুনুনি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, আরসা গঠিত হয়েছে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সরকার ও আধা সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে।
“আমাদের প্রথম উদ্দেশ্য হলো অমানবিক নির্যাতনের হাত থেকে আমাদের জনগণকে মুক্ত করা। ধারাবাহিকভাবে সব বর্মী সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে,” তিনি বলেন।
তিনি আরও বলেন, দলটি স্বাধীন। আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সঙ্গে দলের কোনো যোগাযোগ নেই। বাইরের কোনো সংগঠনের কাছ থেকে আরসা কোনো অর্থ সহায়তাও পায় না।
বিদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূতদের প্রতি তিনি আরসাকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তাঁরা যে দেশে বসবাস করছেন সে দেশের প্রতি অনুগত থাকা ও আইনকানুন অনুসরণেরও অনুরোধ করেছেন। হারাকাহ আল ইয়াকিন মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত বিশজন রোহিঙ্গার অনুদানে গঠিত হয়। এটা প্রায় অবাস্তব যে তারা বিদেশে অবস্থানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা ও অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করছে না।
১৯ মিনিটের ওই ভিডিওতে আরসা নেতাকে মুখ ঢাকা ছয়জন সশস্ত্র ব্যক্তি বেষ্টিত অবস্থায় দেখা যায়। ভিডিওটি অবশ্য এখন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরসা নেতা তাঁর বার্তাটি শেষ করেছেন রাখাইনে বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে। তাঁরা যদি সেনাবাহিনীর সহায়তায় কর্মকাণ্ড চালায় তাহলে প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি ইসলামিক স্টেটের মতো চরমপন্থী দলের সঙ্গে (যদিও নাম উল্লেখ করেননি) যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন ও রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী সংগঠনে যুক্ত হওয়ার মোহে পড়তে নিষেধ করেছেন। তবে আদতে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ আছে কিনা সেটা পরিষ্কার নয়। তবে এটা পরিষ্কার যে আরসা বা হারাকাহ আল ইয়াকিন একটি ভ্যানগার্ড সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চায়।
এটাও খুব পরিষ্কার তিনি জাতীয়তাবাদী। আন্তঃদেশীয় কোনো এজেন্ডা তাঁর নেই।
আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ?
তারপরও কি নিশ্চিত করে বলা যায়? এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না? বা গোপনে একটা সম্পর্ক আছে?
বড় উদ্বেগের বিষয় হলো যদি আরসা বাইরের কোনো সংগঠনের কাছ থেকে সহযোগিতা চায় বা নাও চায়, তারা সমর্থন পাবে। মুসলিম বিশ্বে রোহিঙ্গাদের এই দুর্দশা একটা বড় খবর। রাজনীতিক, মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও কট্টর ইসলামপন্থী সবার কাছ থেকেই তারা সমর্থন পাচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার সরকার ইসলামিক স্টেটপন্থী দলের অন্তত দুটি হামলা চেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। তারা ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় মিয়ানমার দূতাবাসে হামলা চালাতে চেয়েছিল।
১৮ আগস্টের ভিডিওতে আবু আম্মা জুনুনি আশ্রয়দাতা দেশগুলোকে বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন ‘আত্মরক্ষার বৈধ সংগ্রামে’ তাঁরা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বার্থ মাথায় রাখবেন। অবশ্যই এই কথাগুলো কল্পনাপ্রসূত। দারিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ঢল সহ্য করে নেওয়াটা কঠিন হয়ে পড়ছে।
পাল্টা হামলার চেষ্টা উসকে দেওয়া হচ্ছে
আমার ধারণা পাল্টা হামলার চেষ্টাকে উসকে দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ থাইল্যান্ডের পাতানি মালয় জঙ্গিদের মতো আরসাও নিরাপত্তা বাহিনী ও তাদের সহায়তাকারী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংগঠনগুলোর ওপর বেছে বেছে হামলার চেষ্টা করবে।
এতে করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের যে পরিচয় দাঁড়িয়েছে, সেটা অক্ষুণ্ন রাখা সম্ভব হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে তাদের পৃষ্ঠপোষকরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবে না। তবে আরসার জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে, অনুমতি বা সমর্থন নিয়ে বা না নিয়ে রোহিঙ্গাদের নামে যদি কেউ হামলা চালায়, তাহলেই আরসা কিন্তু সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য হবে।
যদি এমনটা নাও ঘটে থাকে আরসা ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীরা ওই হামলায় ক্ষিপ্ত। এবং নিরাপত্তাবাহিনীকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে। কট্টর বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা আশিন উইরাথু কঠোর ভাষায় বৌদ্ধদের আত্মরক্ষার পথ বেছে নিতে বলেছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই দাবি মেনে নেওয়ার হাজারটা কারণ রয়েছে। এদিকে আং সান সুচির সরকার রাজনৈতিক কারণে বা শুধুমাত্র অনিচ্ছা থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বলা থেকে বিরত রয়েছে। এ সবই আরও বহু মানুষকে আরসায় যোগ দিতে, সংগঠনটিকে বিস্তৃত করতে এবং মাঠ পর্যায়ে সহিংসতা ও প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়াতে সহযোগিতা করবে।
২৬ আগস্ট আরসার একজন মুখপাত্র এশিয়া টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যদি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি পূরণ না হয়, তাহলে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হবে এবং অব্যাহতভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম চলবে।
মিয়ানমার সরকার বা সেনাবাহিনী এই দাবিতে কর্ণপাত করবেন বলে মনে হচ্ছে না। রাজনৈতিকভাবেও কোনো সমাধানের যেহেতু আশু কোনো সম্ভাবনা নেই, কাজেই আরো সহিংসতার আশঙ্কা থাকছেই।
“তারা বড় হয়েছে অপমান ও নির্যাতনের মধ্য দিয়ে। তাই রোহিঙ্গারা এখন ঐকমত্যে পৌঁছেছে যে যদি তারা যুদ্ধ না করে, তাহলে তারা (মিয়ানমার) কিছুতেই আমাদের কোনো অধিকার দেবে না,” বাংলাদেশে বসবাসকারী একজন রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী এএফপিকে বলেন ।
যাকারি আবুজা ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের অধ্যাপক এবং “Forging Peace in Southeast Asia: Insurgencies, Peace Processes, and Reconciliation.” গ্রন্থের লেখক। এই নিবন্ধের মতামত লেখকের নিজস্ব এবং কোনোভাবেই তা ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স, দ্য ন্যাশনাল ওয়ার কলেজ বা বেনারনিউজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নয়।