অভিজিৎ হত্যার আরো প্রতিক্রিয়া, তাঁর স্ত্রী বন্যা যুক্তরাষ্ট্রে


2015.03.03
BD-bonna-620-marc2015.jpg স্বামী অভিজিৎ হত্যাকান্ডের দিন হামলায় আহত রাফিদা আহমেদ বন্যাকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এএফপি

সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী হারানো রাফিদা আহমেদ বন্যা চাপাতির আঘাত নিয়ে ফিরে গেলেন যুক্তরাষ্ট্রে, যেখান থেকে মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগে দেশে এসেছিলেন দুজনে। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস বন্যাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর সকল ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা গেছে। খবরঃ ঢাকার গণমাধ্যম।

বন্যার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার শ্বশুর অধ্যাপক অজয় রায়। তবে ঠিক কোন ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ছেড়েছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারেননি তিনি।
বন্যার চিকিৎসাসহ যাবতীয় বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস থেকে দেখভাল করা হচ্ছিল বলে জানান অজয় রায়।
সোমবার ২ মার্চ রাতে বন্যাকে স্কয়ার হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তিনি।

হামলায় নিহত লেখক অভিজিতের বাবা অজয় রায় বলেন, “বন্যার সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য ব্যাংকক থেকে তারা একজন ডাক্তার এনে রেখেছিল বলে শুনেছি।
“সোমবার রাতে তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজের সময় সেখানে ছিলাম। রাতে বন্যার এক আত্মীয়ের বাসায় তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা।
“ওই রাতে অথবা মঙ্গলবার সকালের কোনো একটি ফ্লাইটে তাকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
স্কয়ার হাসপাতাল থেকে রাত ৯টার দিকে বন্যাকে রিলিজ দেওয়া হয় বলে হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্র থেকে জানা গেছে।

লেখক এবং ব্লগার অভিজিৎ হত্যাকান্ডের ঘটনা দেশে এবং বিদেশে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। গণ মাধ্যম থেকে শুরু করে সোশাল মিডিয়ায় উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। বিশেষত মুক্ত চিন্তার লেখকদের উপর আঘাত মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাতের সামিল বলে উল্লেখ করছেন অনেকেই।
ঢাকার ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম মঙ্গলবার ৩ মার্চ প্রকাশিত তার মতামত কলামে "আমরা সবাই মুক্ত-মনা", অভিজিতের প্রতিষ্ঠিত ব্লগ মুক্ত-মনার দৃষ্টিভঙ্গিকেই তিনি তুলে ধরে বলেন, অভিজিৎ-কে হত্যা মুক্ত চিন্তার উপরই আঘাত স্বরূপ। আমাদেরকে একত্রে এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে মুক্ত চিন্তার প্রবাহকে টিকিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে তরুনদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে,  ইসমামের নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তাদেরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে, বিপথগামী করছে, তাদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। ব্যপক প্রচারণার মাধ্যমে এই অশুভ উগ্রপন্থাকে রুখে দিতে হবে।

এদিকে, মুক্ত-মনা ব্লগের সাইট হ্যাক ও বন্ধ করা হয়েছে বলে যে খবর পুলিশের তদন্তের বরাত দিয়ে বের হয়েছে তা কার্যত সঠিক নয়। মুক্ত-মনা সাইট অভিজিতের হত্যার পরদিন অন্য মডারেটরদের তত্বাবধানে যথারীতি প্রকাশ হচ্ছে। অনেকে অভিজিৎ হত্যার প্রতিক্রিয়া ও মতামতও প্রকাশ করছেন। তবে, প্রচ্ছদ বা হোমপেইজে শোকের প্রতিক কালো রঙ-এ ঢেকে তাতে বার্তা লেখা হয়েছে, "আমরা শোকাহত, কিন্তু আমরা অপরাজিত"। ফ্রান্সের শার্লি হেবদো পত্রিকা অফিসে হামলা ও হত্যাকান্ডের পর যেমন পত্রিকাটির ওয়েব সাইটে বার্তা লেখা হয়েছে " উই আর ইউনাইটেড ইন আওয়ার গ্রিফ এন্ড উই রিমেইন আনডিফিটেড"। ঠিক সেই ভাষাই মুক্ত-মনার সাইটে প্রতিফলিত হচ্ছে।  
মুক্ত-মনার একজন ব্লগার প্রতিবাদী এক লেখার শিরোনাম দিয়েছেন, "আমিই অভিজিৎ"।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।