বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি পন্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
2016.03.17
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সরাসরি পন্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, এতে মাত্র চার দিনের মধ্যে একদেশের পন্য অন্যদেশে পৌঁছাবে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান জানান, বর্তমানে কলম্বো বা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে পৌঁছাতে ২৫ দিন সময় লেগে যায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরাসরি জাহাজ চলাচলের ফলে দুইদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে। সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতীয় পণ্য তাদের ভুমি-আবদ্ধ ৭ টি রাজ্যে নিয়ে যেতে পারবে।
মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, “আমি আজ মঙ্গলবার এই পরিবহন যাত্রা উদ্বোধন করেছি বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশি একটি জাহাজ ভারতের বন্দরে যাত্রা করবে, এটা আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক ঘটনা”।
তিনি বলেন, এই সরাসরি পরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায়, ভারত থেকে একটি জাহাজকে কলম্বো বা সিঙ্গাপুর বন্দরে জাহাজ বদল করে চট্টগ্রাম পোর্টে আসতে হতো। এতে ২৫ দিন সময় লাগতো, এখন সরাসরি ব্যবস্থায় ৪ দিন সময় লাগবে।
চুক্তি অনুসারে এখন ভারতীয় কার্গো জাহাজ বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, আশুগঞ্জ,পায়রা,খুলনা,মংলা এবং পাংগাঁ বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। ভারতের কলকাতা,হলদিয়া,পারাদিপ, বিশাখাপত্নম,কানিদা, কৃষ্ণপাত্নম এবং চেন্নাই থেকে তাদের ৭ রাজ্যে মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি শিপিং কোম্পানি নীপা পরিবহন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে তুলা ও বস্ত্র নিয়ে ভারতের কৃষ্ণপাত্নম বন্দর অভিমুখে রওনা হবে। সাংবাদিকদের জানালেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী সিরাজুর রহমান।
তিনি জানান, চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা পৌছাতে এখন ২ দিন লাগে, আগে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো হয়ে ২৫ দিন লাগতো। তাতে খরচ বেশি পড়তো, আর সেটা ভোক্তাদের উপর গিয়ে পড়তো।
বাংলাদেশ-ভারত উপকূলীয় জাহাজ পরিবহন চুক্তিটি করে গত বছর ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে।গত নবেম্বরে দুইদেশের মধ্যে একটি প্রটোকল চক্তিও হয়। উল্লেখ্য, দুইদেশের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমান প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
বিশ্বব্যাংকের হিসেবে, বাংলাদেশ তার মোট আমদানির ১৫ ভাগ ভারত থেকে আমদানি করে থাকে। পক্ষান্তরে ভারত বাংলাদেশ থেকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মাত্র ১ ভাগ আমদানি করে থাকে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমতির সাবেক সভাপতি কিউ কে আহমেদ বেনার নিউজকে জানান, “উপকূলীয় এই পরিবহন ব্যবস্থা এই অঞ্চলে বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের এবং ভুমি-আবদ্ধ ভারতের ৭ রাজ্য, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে”।
তাঁর মতে, এই ব্যবস্থায় পরিবহন খরচ কমে আসলে বাংলাদেশে ও ৭ রাজ্যে ঐসব পন্যের দাম কমে আসবে।
বাংলাদেশ ইকনোমিক রিপোর্টারস ফোরামের সাবেক সভাপতি ও কলামিস্ট খাজা মইনুদ্দিন বেনার নিউজকে বলেন, এই পরিবহন ব্যবস্থায় ছোট ছোট জাহাজ পরিবহনে যুক্ত হবে যেগুলো বন্দরগুলোর সঙ্গে শাটল হিসেবে ব্যবহৃত হবে এতে সময় কমে আসবে এবং পন্যের মুল্যও কমে যাবে।