পাকিস্তানে ছাপা ভারতের জাল টাকা সহ গ্রেপ্তার ৬
2015.12.04
পাকিস্তানে ছাপানো এক কোটি ভারতীয় জাল রুপি উদ্ধার করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের একজন পাকিস্তানি নাগরিক।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা ও মানবপাচারকারী চক্রের এসব সদস্যকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব ।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ওই পাকিস্তানি নাগরিকের নাম আবদুল্লাহ ওরফে সেলিম (৪২)। অপর পাঁচজন হলেন মো. জাহাঙ্গীর (৪৫), আবদুল খালেক (৫৫), মো. কামরুল ইসলাম (২৮), আবু সুফিয়ান (৪৮) ও মামুনুর রশীদ (৪৫)। তাঁদের কাছ থেকে জাল ডলার, টাকা এবং পাকিস্তানি পাসপোর্ট ও সিল আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র্যাবের সদর দপ্তরে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান তাঁদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বিমানবন্দর পদচারী সেতু এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে আবদুল্লাহ সেলিম, মো. জাহাঙ্গীর ও আবদুল খালেককে আটক করে র্যাব-১ এর একটি দল।
সে সময় তাদের কাছ থেকে ৭০ লাখ ভারতীয় জাল রুপি, ৯ হাজার ১২৫ ডলার, ২১টি পাকিস্তানি জাল পাসপোর্ট, আটটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ১১০ সৌদি রিয়াল, মানবপাচারে ব্যবহৃত বিভিন্ন দূতাবাসের জাল সিল তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিমানবন্দরের চত্বরে বাবুস সালাম মসজিদের পাশে আল আমিন রেস্তোরাঁর সামনে থেকে কামরুল ইসলাম সুফিয়ান ও মামুনুর রশীদকে রাতে আটক করা হয়। এদের কাছ থেকে ৩০ লাখ জাল ভারতীয় রুপি, ৬ লাখ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা, ৪৩ হাজার ১৯০ পাকিস্তানি রুপি, ১৩ হাজার ৬২৭ দিরহাম, ৭টি এয়ার পোর্ট ভিজিটর্স পাস, ৫টি মোবাইল, ৪টি বিদেশি সিম কার্ড, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ট্রাভেল পারমিট ফরম আটক করার কথা জানায় র্যাব।
“ভারতীয় যেসব জাল মুদ্রা উদ্ধার করা হয় সেগুলো পাকিস্তানে ছাপানো হয়। এগুলো নিখুঁতভাবে ছাপা হয়। এ চক্রের কামরুল ইসলাম জাল মুদ্রা চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে ভারতের মালদহের রাজন কর্মকার নামে একজনের কাছে পাঠাত,” সাংবাদিকদের জানান মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, “রাজন ভারতে তার সহযোগীর কাছে এক লাখ জাল রুপি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার ভারতীয় মুদ্রায় বিক্রি করত। ভারতের যেসব পণ্য বাংলাদেশে আসত সেসব পণ্যের মূল্যে এই জাল টাকায় পরিশোধ করা হতো।”
র্যাব সূত্র জানায়, এই পাচারকারী চক্রের মূল হোতা আবদুল্লাহ সেলিম। তিনি ১৯৭৯ সালে পাকিস্তানে চলে যান। তারপর মানবপাচার ও জাল মুদ্রা-পাচারকাজে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বাংলাদেশে যাতায়াত করতেন।
পাকিস্তানে যারা পাসপোর্টবিহীন বাংলাদেশি নাগরিক আছেন, তাদের বাংলাদেশে আসা-যাওয়ায় এই চক্রটি সহযোগিতা করত বলেও জানায় র্যাব।
ফেসবুকে প্রচারণা, গ্রেপ্তার তিন
বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ থাকলেও বিকল্প পথে এই অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুকে সরকারবিরোধী প্রচারণার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ।
গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হচ্ছে-তওহীদ হাসান (২১), তানভীর আহমেদ (১৮) ও ওমর ফারুক (২২)।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিভিন্ন ভুয়া আইডি যেমন মাঝি ছাড়া নৌকা, আলবার্ট আইনস্টাইন ইত্যাদি দিয়ে বিকল্প পথে ফেসবুকে ঢুকে এরা সরকার তথা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিল।”
তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মো. মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সামনে রেখে গত ১৮ নভেম্বর থেকে ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপ বন্ধ করে দেয় সরকার।
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বন্ধ করা হলেও কবে নাগাদ এ মাধ্যমগুলো খুলে দেওয়া হবে তা এখনো স্পষ্ট করা হয়নি।
বিড়ম্বনায় তারানা হালিম
নিজের নামে বেশ কয়েকটি ভুয়া ফেসবুক পেজ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ।
অন্যদিকে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সমালোচনার মুখে পড়েছেন নিজের ফেসবুক পেজ সব সময় আপডেট হওয়া নিয়ে।
সরকার ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার পরেও এসব পেজ প্রতিনিয়তই হালনাগাদ তথ্য আসছে, যা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
“আমার নামে কয়েকটি ফেইক পেজ রয়েছে। এগুলো আমার পেজ নয়,” বেনারকে জানান তারানা হালিম।
তার নামে ওই ভুয়া ফেসবুক পেজগুলো দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হওয়ায় সেগুলো বন্ধ করা যায়নি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই পেজগুলোর অ্যাডমিন দেশের বাইরে।”
ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার পর তারানা হালিম নামে তাঁর পেজটি আর আপডেট হয়নি বলে জানান তারানা হালিম।
আগামী ৬ বা ৭ ডিসেম্বর ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথা রয়েছে বলে সাংবাদিকদের ইতিমধ্যে জানিয়েছেন তারানা হালিম।
সমালোচনায় প্রতিমন্ত্রী পলক
ফেসবুক পেজ সব সময় আপডেট হওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, তার টুইটার অ্যাকাউন্টে দেওয়া ওই সব পোস্ট স্বয়ংক্রিয় ফিড হিসেবে ফেসবুকে আপডেট হয়েছে।
“যেদিন থেকে ফেসবুক বন্ধ করা হয়েছে, সেদিন থেকেই আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি,” সাংবাদিকদের জানান পলক।
“ফেসবুক পেজে যেসব আপডেট দেওয়া হয়েছে, তা টুইটারের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে । আমার শেয়ারগুলো দেখলে বোঝা যাবে সেখানে অবশ্যই টুইটারের চিহ্ন থাকবে।”
বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহারের বিষয়টি জানা থাকলেও তা কখনো ব্যবহার করেননি বলে জানান প্রতিমন্ত্রী পলক।
এদিকে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে পলক বলেছেন, বাংলাদেশে বন্ধ থাকা ফেসবুক ‘খুব অল্প সময়ে’ খুলে দেওয়া হবে।