ব্লগার হত্যাঃ পুলিশের নড়াচড়া নেই, ঘটছে উগ্র মৌলবাদীদের উত্থান
2015.08.07
একের পর এক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পর একটিরও সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। মামলাগুলোর তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় তাঁদের পরিবার-স্বজনরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এই অবস্থার মধ্যে শুক্রবার রাজধানীর গোড়ানে নিজ বাসায় খুন হলেন আরেক ব্লগার নীলাদ্রি চক্রবর্তী।
এ ধরনের নৃশংস ঘটনার বিচার বা প্রতিরোধে দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা নেই। বিভিন্ন শ্রেণী–পেশার নাগরিক, গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেলেও সরকার অনেকটা নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অভিযোগ করছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম মনে করেন, “মধ্যপ্রাচ্যে আইএস’র উত্থান দেশের মৌলবাদীদের নাড়া দিয়েছে। যারা এত দিন চুপ করে ছিলেন তারা আবারও তৎপরতা শুরু করেছে।”
“পুলিশ তদন্ত করছে। অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে শনাক্ত করেছে। এরা সবাই উচ্চ শিক্ষিত। এদের মধ্যে একজন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী,” বেনারকে জানান মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল বলেন, “আমরা শেষ চেষ্টা করছি। এরপর গণবিজ্ঞপ্তি আকারে সন্দেহভাজনদের ছবি প্রকাশ করা হবে।”
অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফারাবী শফিউর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফারাবী ফেসবুকে ও ব্লগের বিভিন্ন পোস্টে অভিজিৎকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
“অভিজিৎ হত্যার কোনো অগ্রগতি আমার জানা নেই। চিন্তা করছি, কয়েক দিন পর আমি ডিবি অফিসে যাব অগ্রগতির কোনো তথ্য আছে কিনা, তা জানতে,” বেনারকে জানান অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ।
পরপর কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা না হওয়ার পরেই গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আশা প্রকাশ করেছেন, “খুনিরা ধরা পড়বে”।
গতকাল মন্ত্রী বলেন, তিনি এর মধ্যেই পুলিশের মহাপরিদর্শক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুলিশের অনেকগুলো দল খুনিদের ধরতে মাঠে নেমেছে।
ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাক স্বাধীনতা
বাংলাদেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ হলেও বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন ঘটছে না। এ নিয়ে সমাজের সচেতন মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে।
এ ছাড়া বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান স্বীকৃত হলেও এর প্রয়োগ খুব একটা নেই।
“আমাদের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা ও বাকস্বাধীনতার কথা সুস্পষ্টভাবে বলা থাকলেও তা দিন দিন বিভিন্নভাবে সংকুচিত হচ্ছে। একদিকে সরকার এ সঙ্কোচনে ভূমিকা রাখছে, অন্যদিকে ধর্মান্ধ, মৌলবাদী ও উগ্রবাদী গোষ্ঠীও এই ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে প্রাণপণ অবস্থান নিয়ে আছে। স্বাধীন বাংলাদেশের শুরু থেকেই মৌলবাদীদের এ অবস্থান চলে আসছে,” বেনারকে জানান বদিউল আলম মজুমদার।
ব্লগার হত্যা বাড়ছে কেন?
সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, এ ধরনের চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড দেশে-বিদেশে বেশি আলোচনা তৈরি করে, অস্থিরতার জন্ম দেয়। আর যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটায় তাদের লক্ষ্য হচ্ছে ত্রাস, আতঙ্ক, অস্থিরতা সৃষ্টি করা।
তবে এসব হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে সরকারের কোনো প্রস্তুতির কথা এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা।
“মুক্তচিন্তার লেখক বা ব্লগারদের রক্ষায় সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এটা দুঃখজনক,” বেনারকে জানান মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল।
দেশে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ থাকতে ব্লগারদের ওপর একের পর এক হামলায় দেশে মুক্তচিন্তার বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশে ইসলামিক স্টেট(আইএস) এর বিকাশ ঘটনার শঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশিষ্ট নাগরিকদের কেউ কেউ।
“রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পর্যাপ্ত শৃঙ্খলার অভাবে দেশে উগ্রবাদের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়ে আছে। আমরা যেন আইএস এর জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছি,” জানান ড. বদিউল আলম। তবে তিনি বলেন, “আমার এই ধারণা যেন, এই দেশের ক্ষেত্রে সত্য না হয়।”
সন্দেহের তীর জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকেই
“ধর্মের নামে নিজের আদর্শকে ব্যবহার করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য কিছু লোক ইসলামের নাম ব্যবহার করে ভ্রান্ত ধারণা ছড়াচ্ছে। যার জন্য ইসলাম ধর্ম কোনো ভাবেই দায়ী নয়,” বেনারকে জানান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল।
তবে তিনি বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে এবং এটা সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু তাই বলে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দেওয়ার বিষয়ে সবাইকে সচেষ্ট থাকা উচিত।
তবে এ ঘটনায় সরকারের দুর্বলতা বা নিষ্ক্রিয়তাকে যেমন একটি পক্ষ দায়য় করছে, তেমনি আরেকটি পক্ষ বিএনপি–জামায়াত বিরোধী জোটকে দায়ী করছে।
“আমরা আগেও বলছি, এখনো বলছি-বিএনপি-জামায়াতের ছাতার নিচে এই হিংস্র জঙ্গি শক্তি বিকশিত হয়েছে। এই শক্তিকে নির্মূল করার বদলে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের যোগদানের জন্য সরকারি দল আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক দরজা খুলে দিয়েছে,” জানান বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, যিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার একজন সদস্য।
অবশ্য ইসলামি দল হিসেবে সন্দেহের মধ্যে থাকা জামায়াতে ইসলামী নিলয় হত্যার বিচার চেয়ে শুক্রবারই বিবৃতি দিয়ে ঘটনার বিচার দাবি করেছে।
“এ ঘটনার দ্বারা আবারও প্রমাণিত হলো, দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ। একের পর এক এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটেই যাচ্ছে। অথচ সরকার হত্যাকাণ্ড রোধ এবং হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে,” বিবৃতিতে জানান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ, যিনি সাবেক সংসদ সদস্য।
ই মেইলে হত্যার দায় স্বীকার
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের (এআইকিউএস) বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম। ইমেইলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ওই জঙ্গি সংগঠনটি ।
উগ্র মৌলবাদীদের উত্থান ঘটছে কি?
যে ব্যক্তি বা সংগঠন এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ঘটাক না কেন, ঘুরেফিরে সন্দেহের তীর মৌলবাদী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তির দিকে গড়াচ্ছে।
“জঙ্গিদের বা জঙ্গিবাদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যুদ্ধকেই তারা একটি ‘আদর্শ’ বলে গ্রহণ করে বা ‘পরম’ গণ্য করে । নিজেদের মতাদর্শকে তারা সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করেই ক্ষান্ত হয় না, সমাজে সে আদর্শের প্রভুত্ব বা আধিপত্য কায়েমের জন্য এর শত্রুদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র নিষ্ঠুর ক্ষমাহীন সংগ্রামের ঘোষণা দেয়। এ অর্থে জঙ্গিবাদীরা উদার মানবতাবাদ ও গণতন্ত্র শুধু নয়, মধ্যপন্থারও বিরোধী,” বেনারকে জানান অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ।
“ধারাবাহিকভাবে এসব হত্যাকাণ্ড মৌলবাদী গোষ্ঠীই করছে এবং তারা সংবিধানস্বীকৃত মুক্তচিন্তার ওপর আঘাত করছে, আর সরকার চেয়ে চেয়ে দেখছে,” বেনারকে জানান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হাসান তারেক।
বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ) এ ঘটনার জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী করেনি। তবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
“অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের মেধাবী সন্তানদের একের পর এক হত্যার যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তা দেশ ও জাতির জন্য খুবই ভয়ংকর।একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে, এদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, এক বিবৃতিতে জানান বোয়াফের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় ।
পুলিশকে সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান
জাতিসংঘ কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনকে দায়ী না করে এক বিবৃতিতে বলেছে, “ইন্টারনেটে শান্তিপূর্ণভাবে মতামত প্রকাশকারী মানুষের প্রতি অসহিষ্ণুতা আপাতদৃষ্টিতে বেড়ে যাচ্ছে।”
“নাগরিকদের সুরক্ষায় পুলিশকে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে,” মত দিয়েছে জাতিসংঘ।
ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়কে কুপিয়ে হত্যার নিন্দা জানিয়ে খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস শুক্রবার রাতে এই বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত করতে এবং আগের সব ব্লগারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাতিসংঘ প্রতিনিধি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গবেষণা পরিচালক ডেভিড গ্রিফিথ বলেন, এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড এখানেই শেষ হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের কণ্ঠরোধ করতেই যে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে এবং এটি অগ্রহণযোগ্য।
গ্রিফিথ বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীন চর্চাকে কোনোভাবেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। এ ধরনের আক্রমণ যাতে আর না হয়, সেটি বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট শুক্রবার এক বিবৃতিতে নিলয় হত্যার নিন্দা জানায়। বলা হয়, “আমরা বাংলাদেশিদের পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানাচ্ছি যারা এই বর্বর কাজের বিরুদ্ধে এবং স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে”।
মুক্তচিন্তার ওপর এমন আঘাতে ক্ষোভ ও ধিক্কার জানানো হয়েছে সব মহল থেকেই। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন পৃথক বিবৃতি দিয়েছে।
তবে এ নিয়ে সরকার বা সরকারি দল আওয়ামী লীগ, জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবং দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া শুক্রবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
“ঘটনার ধরন দেখে মনে হয়, আগে যারা রাজিব, অভিজিৎ, ওয়াশিকুর ও অনন্তসহ অন্যদের খুন করেছে, তারাই এটা করেছে,” বেনারকে জানান বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, যিনি শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক।
ড. সুলতানা কামাল বলেন, মুক্তচিন্তার মানুষদের রক্ষায় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই একের পর এক এমন ঘটনা ঘটছে।
মৌলবাদী শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক ওই উপদেষ্টা।
“সরকার খুনিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিচ্ছে না। বিচারহীনতার ধারায় এখন দেশ চলছে। সরকার মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও মৌলবাদীদের প্রতিহত করতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না,” বেনারকে জানান বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
ওই রাজনীতিবিদের মতে, হামলার বিরুদ্ধে জনগণের সর্বাত্মক আন্দোলনকে তীব্র করতে হবে। কোনো কূটচালের ফাঁদে পা না দিয়ে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করাসহ সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী শক্তিকে দমন করতে হবে।
রাস্তায় নেমে ক্ষোভ গণজাগরণ মঞ্চের
রোমহর্ষক এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর রাস্তায় নেমে পড়ে গণজাগরণ মঞ্চ, যে সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে এবং মৌলবাদ–সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে টানা আন্দোলন করে যাচ্ছে।
নৃশংস এই ঘটনার পর নিলয় হত্যার বিচার দাবিতেই স্লোগানমুখর হয়ে ওঠে জাতীয় জাদুঘরের সামনের এলাকা।
“আগে আমাদের সহযোদ্ধাদের রাজপথে হত্যা করা হতো। আজকে নিলয়কে বাসায় ঢুকে হত্যা করা হলো,” ক্ষোভের সঙ্গে বেনারকে বলেন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
ইমরান জানান, “এরপর দেখা যাবে, আজকে যারা নিলয়ের হত্যার বিচার দাবি করছি, তাদের কাউকে কিছুদিন পর হত্যা করা হবে,”
নিলয়ের হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ইমরান বলেন, “আমাদের সহযোদ্ধারা বিক্ষুব্ধ। আমরা একে একে চারজন সহযোদ্ধাকে হারালাম। এখনো পর্যন্ত তাদের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।”