নারায়ণগঞ্জে পুণ্যস্নানে পদদলিত হয়ে নিহত ১০
2015.03.27
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় সনাতন সম্প্রদায়ের পুণ্যস্থান লাঙ্গলবন্দে মহাঅষ্টমীর পুণ্যস্নানের সময় পদদলিত হয়ে সাত নারীসহ ১০ জন পুণ্যার্থী মারা গেছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।খবর প্রথম আলো ও বিডিনিউজ২৪-এর।
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে অষ্টমী পুণ্যস্নান শুরুর কয়েক ঘণ্টার মাথায় পুণ্যার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ঘাটের কাছের একটি বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ওই গুজব থেকেই ঘাটমুখী রাস্তায় অতিরিক্ত মানুষের হুড়োহুড়ি শুরু হলে ১০ জনের মৃত্যু হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামের দেওয়া ভাষ্য, সকালে পুণ্যস্নানের পদযাত্রায় প্রচণ্ড ভিড় হয়। তখন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে রাজঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সুচিত্রা রানী (৭০), ভানুমতি (৫০), রাহী (২৮), কানন সাহা (৫০), মালতী (৬০), তুলসী দেবনাথ (৫০), ভগবতী (৪০), রঞ্জিত চন্দ্র (৫৫), মাদারীপুরের চরমুগরিয়া কলেজের শিক্ষক নকুল চন্দ্র বিশ্বাস (৫৫) ও নিতাই (৫০)। আহত ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, ভোর পাঁচটা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে মহাষ্টমী স্নান উৎসবের লগ্ন শুরু হয়। এ সময় থেকে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। পুণ্যার্থীদের জন্য ১৬টি ঘাটে স্নানের আয়োজন করা হয়। ১৬টি স্নানঘাটের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো রাজঘাট। পুণ্যার্থীরা বিশ্বাস করেন, এই ঘাটে স্নান করলে পুণ্য বেশি হয়। তাই এই ঘাটে ভিড় বেশি ছিল। ভিড়ের চাপে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে পদদলিত হলে ১০ জন পুণ্যার্থী মারা যান। তাঁদের মধ্যে সাতজন নারী।
কয়েকজন পুণ্যার্থী অভিযোগ করেন, পুণ্যার্থীদের ভিড় সামলাতে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন না। স্নানের সময় অনেকটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ সময় পুণ্যার্থীরা পদদলিত হন।
স্নান উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব চক্রবর্তীর ভাষ্য, তাঁদের দায়িত্বে কোনো অবহেলা ছিল না। ঘাটের রাস্তাটি ও কালভার্ট সরু হওয়ায় ধাক্কা খেয়ে এমনটা ঘটেছে।
বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোকাররম হোসেনের ভাষ্য, এ ঘটনার পরে প্রত্যেকটি ঘাটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে পুলিশ সদস্যরা নিজেরা মানবঢাল তৈরি করে যাতায়াতের পথ তৈরি করেছে।
নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
লাঙ্গলবন্দে এখনো স্নান চলছে। লগ্ন শেষ হবে শনিবার ভোর ছয়টা ৫৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় এ ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন।