ফ্লোরিডায় আটক বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা অনশন ভাঙল
2015.12.22

ফ্লোরিডার ডিটেনশন সেন্টারে অন্তত ১৬ দিন ধরে আটক বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীরা স্বেচ্ছায় অনশন ধর্মঘট শেষ করলো, ইমিগ্রেশন ও কাস্টম এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)এর এক কর্মকর্তা বেনার নিউজকে জানিয়েছে।
৬ বন্দি মিয়ামীর ক্রোম সার্ভিস প্রসেসিং সেন্টারে ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করা অনশন সোমবার সন্ধ্যায় সমাপ্ত ঘটায়।
এই ৬জন অনশন থেকে সরে আসেন সেদিনই যেদিন ফ্লোরিডায় ফেডারেল এক আদালত তাদেরকে জোর করে খাবার দেবার ব্যবস্থা করতে বলেছিলো এই বলে যে তাদের জীবন রক্ষা করাটা জরুরি।
আইসিই-এর আটলান্টা ভিত্তিক দফতরের মুখপাত্র ব্রায়ান ডি কক্স বেনারকে জানান, “অবশিষ্ট সবাই গতরাতে স্বেচ্ছায় তাদের ডিনার গ্রহন করেছে, অনশন ধর্মঘট এখন শেষ”। তিনি জানান, তাদের কাউকে টিউবের মাধ্যমে খাবার দেয়া হয় নাই”, তাদেরকে জোর করা হয়েছে কিনা তার উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে আটক কেন্দ্রগুলোতে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে যাদের আবেদন খারিজ হয়েছে তারা একযোগে সিরিজ অনশনে যায়। ‘শুরুতে তারা ১০০ জনের মতো ছিল’।
আইসিই’র মুখপাত্র জানান, ‘তাদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশি ছিল’।
নিউইয়র্ক-কেন্দ্রিক এনজিও যারা অভিবাসীদের আইন সহায়তা দিয়ে থাকে তাদের হিসাবে মিয়ামি সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কেন্দ্রে আটক প্রায় ২০০ জন অনশন শুরু করে। তাদের মধ্যে বাংলাদেশি, ভারতীয়, পাকিস্তানি, নেপালি, আফগানিস্থানি ও আফ্রিকার বিভিন্নস্থান থেকে আসা মানুষ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে অন্তত ৬ রাজ্যে গত দুই মাস ধরে অনশন চলেছে।
সব আটককৃতরা যুক্তরাষ্ট্রে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছে। তারা ফ্লোরিডা,কলোরোডা,কালিফোর্নিয়া,টেক্সাস,লুসিয়ানা ও আলাবামায় আইসিই আটক কেন্দ্রে বিভিন্ন সময় ধরে অনশনে অংশ নেয়।গত শুক্রবার বেনারকে জানান এই তথ্য ড্রামের(ডিআরইউএম) নির্বাহি পরিচালক ফাহদ আহমেদ।
আমরা মরতে ইচ্ছুক
এসোসিয়েটেট প্রেস জানায়, আগের দিন তাদের কয়েকজনকে ফ্লোরিডার ডিস্ট্রিক জাজ সিসিলা আল্টোনাগায় হূইল চেয়ারে করে আনা হয়। সেখানে বিচারক হোমল্যান্ড ডিপার্টমেন্টের লোকজনকে বলে দেন, " যদি প্রয়োজন হয় তাদেরকে টিউবের ভেতর দিয়ে খাওয়ানোর জন্য"। "তারা খাবার ছাড়া বাঁচবে না মনে হচ্ছে"।
অনুবাদকের মাধ্যমে সেখানকার একজন আব্দুল আউয়াল আদালতকে বলেন, "আমরা মরতে চাই"।
আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ
অনশনকারীদের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থনা নাকচ করা হয়েছিলো এবং বহিস্কার করার আদেশ দেয়ার পর তারা প্রতিবাদ স্বরুপ অনশনে যায়।
দুই শতাধিক অনশনকারী ড্রামের মাধ্যমে সমন্বিতভাবে বিভিন্ন জায়গার মধ্যে যোগাযোগ রাখে। তাদের বেশিরভাগ ডিপোর্টেশন অর্ডার বা বহিস্কার আদেশ কিংবা অনির্দিষ্টকাল আটকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই এই অনশন করে। তিনি আরো জানান, তাদের আটককাল ১০ মাস থেকে ২৭ মাস ধরে চলছে।
ড্রামের তথ্য অনুযায়ী, ক্রম সেন্টারে ৭ জন শনিবারেও অনশন করছিলো, পরে তাদের সংখ্যা ৬ জনে নেমে আসে। হিসেবে দেখা যাচ্ছে তারা ডিসেম্বরের ২ তারিখ থেকে ১৯ দিন ধরে অনশনে ছিল।
কক্স জানান, অন্তত তিন দিন ৯টি মিল গ্রহন না করা পর থেকে অফিসিয়ালি সেটাকে অনশন ধর্মঘট ধরা হয়।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মুখপাত্র শামীম আহমেদ গত সপ্তাহে বেনারকে জানান, বাংলাদেশি যারা অনশন করছে তারা যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই এদেশে এসেছে। তার মতে, অনেকে মেক্সিকো সীমান্ত পার হয়ে এদেশে ঢুকে পরে।