আইএস সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হামদানকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট

ঢাকা থেকে শাহরিয়ার শরীফ
2015.07.23
BD-isis ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন রহমান ইবনে হামদানের জামিন দেয়নি উচ্চ আদালত। ২৩ জুলাই,২০১৫
বেনার নিউজ

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন রহমান ইবনে হামদানের জামিন দেয়নি উচ্চ আদালত। জিহাদে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে তিনি এক বন্ধুসহ লন্ডন থেকে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যান।

গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে হামদানকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়। এ বছরের ২৯ এপ্রিল বিচারিক আদালত হামদানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে হাই কোর্টে আপিল করেন তিনি।

“২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সিরিয়ায় নুসরা ব্রিগেডের সদস্য হয়ে কথিত জিহাদে অংশ নেন হামদান,” বেনারকে জানান গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, মূলত আইএস ও নুসরা ব্রিগেডের জন্য সদস্য সংগ্রহের বিষয়ে আসিফ আদনানসহ অন্যদের সঙ্গে আলোচনার জন্য গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন হামদান।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিষিদ্ধ উগ্রপন্থী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সন্দেহে রাজধানী থেকে মো. আসিফ আদনান (২৬) ও মো. ফজলে এলাহী তানজিল (২৪) নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২৪ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

আসিফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে হামদানকে আটক করার কথা জানায় পুলিশ। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হামদান গত বছরের ২৭ আগস্ট থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গুলশানের ‘মেজবান’ হোটেলে আরা হামদান পরিচয় দিয়ে অবস্থান করেন। হোটেলের রেজিস্ট্রার চেক করে পুলিশ এ তথ্য পায়।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশ এই নাগরিকের পরিবারের আদি বাসস্থান বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে। তার পরিবারের সবাই ধনাঢ্য ও শিক্ষিত, বসবাস করেন লন্ডনে। হামদান ব্রিটেনেই জন্ম গ্রহণ করেছে। ইংরেজি ও আরবি ভাষায় তিনি পারদর্শী।

হামদান একাধিক বার মরক্কো, মৌরিতানিয়া ও তুরস্ক হয়ে সিরিয়া যান বলে আদালতে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।

হামদানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় গত ৪ জুলাই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অথচ আসামিপক্ষের ১৪ জুলাই করা সম্পূরক আবেদনে এই তথ্য উল্লেখ না করেই জামিনের আবেদন করা হয়।

“অভিযোগপত্র দাখিলের পর আগের আটক আদেশের বিরুদ্ধে জামিন চাওয়ার সুযোগ নেই। তাই ওই আসামীকে জেলেই থাকতে হবে,” বেনারকে জানান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

বিচারপতি ফরিদ আহাম্মদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর অবকাশকালীন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তার জামিনের আবেদন ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ করে দেন।  

“পুলিশ জানতে পেরেছে, আল কায়েদা নেতা আল জাওয়াহিরির ভিডিওবার্তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে হামদান বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে জঙ্গি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিল,” বেনারকে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।