চোখ বাধা সালাহউদ্দিনের উত্তরা থেকে শিলংয়ে রহস্যঘেরা ভ্রমণ
2015.05.19
বাংলাদেশের উত্তরা থেকে অন্তর্ধানের ৬২ দিন পরে ভারতের শিলংয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদকে পাওয়া গেলেও রহস্যের জট খোলেনি মোটেও। মাঝের ৬২ দিন তিনি কোথায়, কাদের হেফাজতে ছিলেন তা এখনো জানা যায়নি।
পাসপোর্ট, ভিসাসহ বৈধ কোনো কাগজ ছাড়াই বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন কীভাবে বাংলাদেশের উত্তরা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ৪০০ কিলোমিটার দূরের শিলংয়ে পৌছলেন তাও স্পষ্ট হয়নি এখন পযর্ন্ত। তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠনো হবে না অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিচার চলবে তা স্পষ্ট করছে না ভারতীয় কতৃপক্ষ।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমদের শরীর খুবই খারাপ বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমদ। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি স্বামীকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে চান। কারন সেখানেই এর আগে তাঁর চিকিৎসা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের শিলংয়ে সিভিল হাসপাতালে বিচারাধীন মামলার আসামিদের ওয়ার্ডে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার পর গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা জানান হাসিনা আহমদ।
সালাহ উদ্দিনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে হাসিনা বলেন, ‘ওনার শরীর খুবই খারাপ। একটানা দুই মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। হাত-পা কাঁপতে থাকে। খুব দ্রুত তাঁর উন্নত চিকিৎসা দরকার।’
তিনি বলেন, সালাহ উদ্দিনের হৃদরোগের সমস্যা আছে। কিডনির সমস্যাও জটিল আকার ধারণ করেছে।
এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা প্রশ্ন করেন, ভারতের চিকিৎসাব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সেখানে চিকিৎসার জন্য যায়। তাহলে তিনি স্বামীকে কেন তৃতীয় একটি দেশে নিতে চাচ্ছেন?
উত্তরে হাসিনা আহমদ বলেন, গত ২০ বছর ধরে সালাহ উদ্দিনের সব চিকিৎসা সিঙ্গাপুরে হয়েছে। হৃদরোগের জন্য তিনবার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। কিডনির চিকিৎসাও সিঙ্গাপুর হচ্ছে। তাই সেখানেই স্বামীকে নিয়ে যেতে চান।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে রহস্যজনক এ ঘটনা নিয়ে চলছে পারষ্পরিক ঠেলাঠেলি। কেউ এর দায়িত্ব নিতে চায় না, তাঁকে ফিরিয়ে আনতে সরকারেরও কোনো উদ্যোগ বা মাথাব্যাথা নেই।
গত ১০ মার্চ রাতে ঢাকার উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সালাহ উদ্দিন আহমদকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর ১৩ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে তাঁকে পাওয়া যায়।
অন্তর্ধানের দ্বিতীয় দিন থেকেই তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এ ঘটনার জন্য আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করে আসছিলেন।
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই সালাহ উদ্দিন নিখোঁজের বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে। কয়েকজন মন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, পুরো বিষয়টি সাজানো নাটক, সালাহউদ্দিন আত্মগোপনে ছিলেন।
“আমাদের কাছে পরিবারের অভিযোগ অর্থাৎ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার অভিযোগই এখন পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে সত্য। কারণ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তাদের তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্তে যদি তারা বলতে পারেন, কারা, কীভাবে সালাহউদ্দিনকে ধরে নিয়েছেন তাহলে পরিবারের অভিযোগ মিথ্যা হবে,” বেনারকে জানান মানবাধিকার কর্মী নূর খান। তিনি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিস কেন্দ্রের পরিচালক।
“সালাহ উদ্দিনকে ফেরাতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারত যদি তাকে এখনই ফেরত দেয়, তাহলে ফেরত আনা হবে," মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা চললে পরে ফেরত আনতে হবে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।”
রহস্যের জট খোলেনি: ১৩ মে ভোরে শিলংয়ে খোঁজ মেলার পরে ১৮ মে শিলংয়ের সিভিল হাসপাতালে স্বামীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। এর আগে বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ, তাবিথ আউয়ালসহ কয়েকজন সেখানে পেঁৗছেন।
১৮ মে শিলং সিভিল হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমবারের মতো সালাহউদ্দিনের দেখা পায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমার চোখ তো বাঁধা ছিল। হাত বাঁধা ছিল। একটা লং জার্নি। মনে হয়, ১২-১৪ ঘণ্টা হবে। দুই ঘণ্টার হয়তো স্টপেজ ছিল। তারপর শিলং গলফ কোর্সের পাশে ওরা আমাকে ফেলে রেখে যায়। আমি তখন চোখ খুলে দেখেছি। কিছু লোককে বললাম, আমাকে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাও অথবা পুলিশে খবর দাও। তারা পুলিশে কল করল। আমার হিস্ট্রি বলার পর তারা মনে করল, আমি বোধ হয় মেন্টাল পেশেন্ট।”
এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) ও মেঘালয় পুলিশ সালাহউদ্দিন কীভাবে কোনো বৈধ কাগজ ছাড়াই ভারতে অনুপ্রবেশ করলেন সে বিষয়টি তদন্ত করছে বলে একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ গণমাধ্যমকে বলেছে, একটি মারুতি জিপসি গাড়িতে করে এনে তাঁকে ১৩ মে ভোরবেলা শিলংয়ে ফেলে গেছে অজ্ঞাতরা। তাঁকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হতে পারে বলেও কথা উঠেছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোয় দেরি হতে পারে বলে জানা গেছে। সোমবার মেঘালয়ের ইংরেজি দৈনিক শিলং টাইমস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, মেঘালয় পুলিশ চাইছে সালাহ উদ্দিনকে ফেরত পাঠাতে আইনি প্রক্রিয়া যত দ্রুত সম্ভব শেষ হোক। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরীক্ষা এখনো শেষ হয়নি। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সালাহ উদ্দিনকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করবে বিএসএফ।
তবে বিএসএফ গত রোববার জানায়, সালাহ উদ্দিনের ফেরতের বিষয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। মেঘালয়ের পুলিশপ্রধান রাজীব মেহতার দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পরই ভারতীয় পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে আদালতে হাজির করতে পারে।
হাসিনা আহমেদ তার স্বামী সালাহ উদ্দিনকে চিকিৎসার জন্য তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে যেতে চান। তবে এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সরকারের নেতা-মন্ত্রীদের মতো পুলিশও এখন পর্যন্ত তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি। সালাহউদ্দিনকে খুঁজে বের করতে পুলিশের দৃশ্যমান কোনো তৎপরতাও ছিল না। শুধু ১৯ মার্চ গাইবান্ধার ফুলছড়ির দূর্গম চরে ব্যাপক আয়োজন করে নিস্ফল তল্লাশি চালায় পুলিশ। এতোদিন পুলিশের খাতায় সালাহউদ্দিন স্রেফ ‘নিখোঁজ' হিসেবে ছিলেন।
“সালাহ উদ্দিনকে কীভাবে, কারা ধরে নিয়ে গেল বা তিনি কীভাবে নিখোঁজ হলেন এগুলোর বিষয়ে পুলিশ এখনো কোনো উপসংহারে পৌছেনি,” বেনারকে জানান পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন।
পুলিশের ও্ কমকর্তা জানান, সালাহ উদ্দিনের বিষয়ে তাঁর পরিবার কোনো মামলা বা জিডি করেননি। পুলিশ একটি জিডি করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের কাজ চলছে। সেই প্রতিবেদন আংশিক শেষ হয়েছে। তবে সেই প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত তাঁকে কেউ ধরে নিয়ে গেছে কী না সে বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।
তবে ঘটনার সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অভিযোগ করে আসছেন, আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা্ তাঁর স্বামীকে ধরে নিয়ে গেছেন। তিনি স্বামীর খোঁজ চেয়ে পরদিন রাতে তিনি গুলশান থানা ও উত্তরা থানায় জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি।
এরপরে ১২ মার্চ সালাহ উদ্দিনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন হাসিনা। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত জানতে চান, সালাহ উদ্দিনকে কেন খুঁজে বের করা এবং ১৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হবে না। ১৫ মার্চ সালাহউদ্দিন কারো কাছে নেই বলে আদালতে পুলিশের পাঁচটি সংস্থা প্রতিবেদন দাখিল করে।
হাসিনা আহমেদের যুক্তি, তাঁকে ধরে নেওয়ার আগে ৭ মার্চ তাঁর দুই গাড়িচালক শফিক ও খোকন ও ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গণিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন ৮ মার্চ সালাহউদ্দিনের খোঁজে গুলশানের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে ও ব্যাংকের এক কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় র্যাব। এরপর ১০ মার্চ তাঁকে ধরে নেয়। এর মাঝে একাধিকবার তাঁর গুলশানের বাসায় তল্লাশী চালানো হয়েছে। বাসার গেটে সার্বক্ষনিক গোয়েন্দা লাগিয়ে রাখা হয়েছে। এতোসবের পরেও কী আর বোঝার বাকী থাকে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
১৮ মার্চ ঢাকার দুটি সংবাদপত্রে (প্রথম আলো ও নিউ এজ) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সালাহউদ্দিনকে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নিয়ে গেছে এ বিষয়ে ওই এলাকায় একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া গেছে। যে বাসা থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই এলাকার নিরাপত্তাকর্মী এবং একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা পত্রিকা দুটির কাছে এর বর্ণনা দিয়েছেন।
উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের নিরাপত্তাকর্মী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে ঢাকার কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সালাহউদ্দিনকে ধরে নেওয়ার আগে ওই বাসার কাছেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পিকআপ দাঁড়ানো ছিল। ওই পিকআপে আসা সদস্যরা সেখানে কর্তব্যরত ৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির নিয়োগ করা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে ১৩-বি নম্বর সড়কটির অবস্থান জানতেও চেয়েছিলেন। ওই বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীরা বলেছেন, অজ্ঞাত পরিচয় অস্ত্রধারীরা সালাহউদ্দিনকে ধরে নিয়ে গেছে।
সরকার পন্থীদের বক্তব্যে সালাহউদ্দিন: ঘটনার শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের বিদ্রুপ করে আসছেন ক্ষমতাসীনরা। গত ১৪ মার্চ রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তাঁকে (সালাহউদ্দিনকে) অ্যারেস্ট করার জন্য খুঁজছি। তিনি কোথায়, তাঁর জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন। সালাহউদ্দিন আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে বিবৃতি দিচ্ছিলেন। কিন্তু সবাই জানে, তিনি ওখান থেকেই (গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়) বিবৃতি দিয়েছেন। আট বস্তা ময়লার সঙ্গে তাঁকেও কোথাও পাচার করে দিয়েছেন কি না, সে জবাব খালেদা জিয়াই দিতে পারবেন।’
এরপর সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা সালাহউদ্দিন যে কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন এই বিষয়টি ইঙ্গিত করে বা সরাসরি উল্লেখ করে ঢালাও বক্তব্য দিয়ে আসছিল। ১৩ মে মেঘালয়ে সালাহউদ্দিনের খোঁজ মেলার পরও বক্তব্যের ঘনঘটা থেমে নেই।
ওইদিনই (১৩ মে) রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রবীন পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটি গুম, অন্তর্ধান কিংবা নিখোঁজ নয়—আত্মগোপন। আত্মগোপন আর গুম এক জিনিস না। এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে—আত্মগোপন দলীয় প্রধানের নির্দেশে করা হয়েছে।’
একই দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অন্য একটি সভায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙ্গ করে বলেন, ‘তিন মাস ষড়যন্ত্র করে সব শেষে বাংলাদেশের জনগণের কাছে খালেদা জিয়া ধরা খাইছে।’
১৬ মে দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌপরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খান বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী আন্দোলন-সংগ্রাম জ্বালাও-পোড়াও করে ব্যর্থ হয়ে সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে নাটক সাজিয়েছেন। যা জনসম্মুখে প্রকাশ পেয়েছে।’
সরকারবিরোধীরা যা বলেনঃ সালাহউদ্দিন নিখোঁজের পর থেকেই তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মী ও স্বজনেরা সরকার ও আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করে আসছে। ১০ এপ্রিল সালাহউদ্দিনের গুলশানের বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়ে গেছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সালাহ উদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে তাঁর দুই গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত কর্মীকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পরিচয়ধারীরা। একমাত্র সালাহ উদ্দিন সাহেবের খোঁজ জানার জন্যই তাঁদের ধরে নেওয়া হয়েছিল। এখন বিষয়টি স্পষ্ট, যারা গাড়ি চালকদের ধরেছিল, তারাই সালাহ উদ্দিনকে উঠিয়ে নিয়েছে।
তবে মেঘালয়ে সালাহউদ্দিনের খোঁজ মেলার পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘সালাহউদ্দিনকে নিয়ে কোনো নিষ্ঠুর ও নির্দয় মন্তব্য না করে তাঁকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে যথাযথ ব্যবস্থা ও সহায়তা করুন। তারা (সরকার) মানবিক আচরণ করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’ এরপর থেকে বিএনপি নেতারা বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে শুধু তাঁকে ফিরিয়ে আনার দাবি করে যাচ্ছেন।