যারা নিষেধাজ্ঞা দেয় তাদের কাছ থেকে কিছু কিনবে না বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
2023.05.15
ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব দেশ নিষেধাজ্ঞা দেবে সেসব দেশ থেকে কোনো কিছু বাংলাদেশ কিনবে না।
“এটা আমাদের অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে বলে দিয়েছি, কেনাকাটার ক্ষেত্রে যারা আমাদের ওপর স্যাংশন দেবে, আমরা তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু কিনব না,” বলেন তিনি।
সম্প্রতি জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর বিষয়ে সোমবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “এখন থেকে আমরা যে বিদেশ থেকে জিনিসপত্র ক্রয় করি, সেখানে আমাদের একটা ক্লজ থাকবে যে, যারা আমাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেবে তাদের থেকে আমরা কোনো কিছু কেনাকাটা করব না।”
“কথা নাই, বার্তা নাই, আমাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাবে, আমরা ভয় নিয়ে বসে থাকব কেন?” বলেন প্রধানমন্ত্রী।
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর সাবেক ও কর্মরত সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমালোচনা করে আসছেন প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারদলীয় নেতারা।
“আমাদের কী কারণে স্যাংশন দিলো? যাদের দিয়ে আমরা সন্ত্রাস দূর করলাম, জঙ্গি দূর করলাম, তাদের ওপরে? হলি আর্টিজানে যারা হামলা করেছিল, তাদের দমন করে মানুষ জীবিত উদ্ধার করতে কিন্তু ২৪ ঘণ্টাও লাগেনি। এরপরেও আরও কোনো ঘটনা কেউ ঘটাতে পারেনি। এরপরেও স্যাংশনটা কীসের জন্য?” প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশ সফর করে ঢাকায় ফিরে গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশ নিষেধাজ্ঞা দিলে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না। রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
এর আগে গত ২৫ এপ্রিল তিন দেশ সফর শুরুর আগেভাগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে যে কোনো দেশের সরকার বদলাতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বেনারকে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য আমার কাছে বিশেষ কোনো মানে তৈরি করে না। পশ্চিমা দেশ বিশেষ করে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। এসব দেশ আমাদের কাছ থেকে কেনে বেশি, বেচে কম।”
“এখন যদি ওইসব দেশও বলে তারা বাংলাদেশের কাছ থেকে কিছু কিনবে না, তাহলে পরিস্থিতিটা ঠিক কি হবে এটা বোঝা মুশকিল,” বলেন বদিউল আলম।
তিনি বলেন, এই ধরনের সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করাই উত্তম।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অন্যতম প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র।
বিএনপি নেই নির্বাচনকালীন সরকারের চিন্তায়: প্রধানমন্ত্রী
চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিএনপি’র মতো যেসব দল সংসদে নেই, তাদের বিষয়টি চিন্তায়ও নেই।
“পার্লামেন্টে যারা আছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করে যে, নির্বাচনকালীন সরকারে তারা আসতে চায়, আমরা নিতে রাজি আছি,” বলেন শেখ হাসিনা।
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে এবং সেই সরকারে বিরোধী দলের কেউ থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি জনগণের জন্য কাজ করছি। জনগণ যদি ভোট দেয় আছি, না দিলে নাই।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিনিস্টার পদ্ধতি অনুসরণ করে, সেখানে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও একইভাবে নির্বাচন হবে।”
“আমরা এটুকু উদারতা দেখাতে পারি। পার্লামেন্টে যারা আছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি ইচ্ছা প্রকাশ করে যে, নির্বাচনকালীন সরকারে তারা আসতে চায়, আমরা নিতে রাজি আছি। এই উদারতা আগে আমরা দেখিয়েছি। এমনকি ২০১৪ সালে আমি খালেদা জিয়াকেও আহ্বান করেছিলাম। তারা তো আসেনি। এখন তো তারা নাইও পার্লামেন্টে। কাজেই ওদের নিয়ে চিন্তারও কিছু নাই,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।