কক্সবাজারে গুলিতে রোহিঙ্গা নারী নিহত

সুনীল বড়ুয়া ও আব্দুর রহমান
2023.02.16
কক্সবাজাৱ
কক্সবাজারে গুলিতে রোহিঙ্গা নারী নিহত কক্সবাজারের উখিয়ার ময়নারঘোনা শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা নেতা মো. আব্দুর রহিমকে গুলি করার স্থান পরিদর্শন করছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তারা। ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
[সৌজন্যে- এপিবিএন]

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে দুটি পৃথক ঘটনায় এক নারী নিহত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনকভাবে আহত হয়েছেন এক রোহিঙ্গা নেতা। ঘটনাস্থল দুটির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

রোহিঙ্গা নারী হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে বেনারকে জানিয়েছেন ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. আমির জাফর।

বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে ৮-পশ্চিম শিবিরের নাজিমউদ্দীনের স্ত্রী নূর কায়াছকে (২৬) একই ব্লকের নূর হাবার ঘরে মাথার ডান পাশে গুলি করে হত্যা করা হয় বলে বেনারকে জানান ৮-এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া ও অপারেশন) মো. ফারুক আহমেদ।

এ হত্যাকাণ্ডে লেদা ক্যাম্পের বাসিন্দা আরাফাত হোসেন (২০) “জড়িত থাকলেও সে পালিয়ে গেছে,” জানান তিনি।

নিহত নূর কায়াছের মা হাজেরা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, তাঁর মেয়েকে আরাফাত হোসেন নামে এক রোহিঙ্গা পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। নূর কায়াছকে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যান। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কারো কোনো শত্রুতা নেই বলেও জানান হাজেরা খাতুন।

নূর কায়াছ নাজিমউদ্দীনের স্ত্রী ও আহমদ হোসেনের মেয়ে।

এদিকে “পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের ধরে নূর কায়াছ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণ করা হচ্ছে,” বেনারকে জানান আমির জাফর।

যদিও এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি।

তবে রোহিঙ্গা শিবিরে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সক্রিয় উন্নয়ন সংস্থা জাগো নারীর প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবরার আল আমিন বেনারকে বলেন, “আমার ধারণা, এ ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। তবে সুষ্ঠু তদন্তে হত্যার কারণ বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি।”

এ প্রসঙ্গে নিহতের প্রতিবেশী নুর হোসেন বেনারকে বলেন, “কায়াছের স্বামী একটি সশস্ত্র অপরাধী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে পরিচিত। সেই সূত্রেও তাঁকে হত্যা করা হতে পারে, এমনটা বলাবলি করছেন ক্যাম্পের কেউ কেউ।”

হেড মাঝি গুলিবিদ্ধ

এদিকে মুখোশধারী চার-পাঁচজন অস্ত্রধারী বৃহস্পতিবার উখিয়ার ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শিবিরের অন্যতম হেড মাঝি আবদুর রহিমকে (৪৫) রোহিঙ্গা বাজারের একটি ফলের দোকানের সামনে থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়।

 “গুলিবিদ্ধ রহিমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে,” বেনারকে জানান উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।

বর্তমানে শিবির এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং “আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে” বলে বেনারকে জানান এপিবিএন কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ।

আবদুর রহিমের ওপর হামলায় জড়িতদেরও খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা শিবিরে হত্যা, চাঁদাবাজি ও সহিংস ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে। পুলিশের হিসেবে, ২০২১ এবং ২০২২ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে ৬৪ জন খুন হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।