মিয়ানমার ছেড়ে আসার পাঁচ বছর: নিরাপত্তা ঝুঁকিতে প্রত্যাবাসন চাওয়া রোহিঙ্গারা
2022.08.24
ঢাকা ও কক্সবাজার
নির্যাতনের শিকার হয়ে পাঁচ বছর আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রত্যাশী নেতারাই সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে মনে করেন রোহিঙ্গা নেতা, মানবাধিকারকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মিয়ানমারের সন্ত্রাসবাদী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এবং মাদক ও মানবপাচারে জড়িত গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতায় কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোর কোনো রোহিঙ্গাই নিরাপদ বোধ করছেন না। সব সময়ই তাঁদের হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজির ভয়ে থাকতে হয়।
রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার মুখে দেশান্তরের পাঁচ বছর পূর্তির মাথায় এমন অভিজ্ঞতার কথাই বেনারকে জানিয়েছেন বাংলাদেশে বসবাস করা মিয়ানমারের এই নাগরিকরা।
তাঁদের মতে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন প্রত্যাবাসনের পক্ষে থাকা শিক্ষিত রোহিঙ্গা নেতা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
গত বছর প্রত্যাবাসনের পক্ষে থাকা আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ জুবায়ের এখন আরসা’র নতুন টার্গেটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মুহিব উল্লাহ ছাড়াও প্রত্যাবাসন সমর্থক আরো অন্তত সাত জন রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গারা।
‘শিক্ষিত’ নেতারা ঝুঁকিতে
গণহত্যার মুখে দেশ ছেড়ে প্রত্যাবাসন প্রত্যাশী হয়ে ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গা নেতাদের একজন খিন মং, যিনি শরণার্থীদের সংগঠন রোহিঙ্গা ইয়ুথ এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকাশ্যে আসেন না ছদ্মনাম ব্যবহারকারী এই রোহিঙ্গা নেতা।
বেনারের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমরা যারা প্রত্যাবাসনের পক্ষে এবং মাদক ও মানবপাচারসহ রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে কাজ করছি, তারা সবাই প্রতিমুহূর্তে প্রাণ হারানোর ভয়ে আছি।”
“এমন অনেক শিক্ষিত রোহিঙ্গা নেতাকে ইতিমধ্যে হত্যা করছে সন্ত্রাসীরা। বিশেষ করে মাষ্টার মুহিব উল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইংরেজি জানা রোহিঙ্গা নেতাদের কেউ কেউ চুপ হয়ে গেছেন,” বলেন টেকনাফের উনচিপ্রাং শিবিরের এই বাসিন্দা।
শুরু থেকেই বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যারা নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের প্রায় সবাই “মোটামুটি শিক্ষিত” বলে বেনারকে জানান মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন।
তিনি বলেন, ওইসব রোহিঙ্গা নেতারা, একদিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, অপরদিকে মাদক ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধেও “খুব শক্ত অবস্থান” নিয়েছেন।
তাঁর মতে, শিবির এলাকায় অপরাধীদের অবস্থান ক্রমাগত পোক্ত হচ্ছে বলেই এমন মানুষদের ঝুঁকির মাত্রা বাড়ছে।
“মুহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর তাঁর সংগঠন এআরএসপিএইচ-এর কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া এবং তাদের কর্মকাণ্ড সংকুচিত করা এমন ভীতিকর অবস্থা তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ,” যোগ করেন নূর।
গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর লম্বাশিয়া শিবিরের এআরএসপিএইচ কার্যালয়ে সভাপতি মুহিব উল্লাহ হত্যাকাণ্ড এবং বালুখালীর ১৮ নম্বর শিবিরের দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ নামের মাদ্রাসায় আরসা বিরোধী মাদ্রাসা শিক্ষক মৌলভী আকিজসহ ছয়জন খুন হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বাড়ায় শিবির এলাকায় সন্ত্রাসীরা কিছুটা কোণঠাসা হলেও তারা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়নি বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।
আশঙ্কায় স্বেচ্ছাসেবীরা
পুলিশের দাবি, গত অক্টোবর থেকে শরণার্থী শিবিরে চালু হওয়া রাত্রিকালীন স্বেচ্ছাপাহারা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা নেতা ও স্বেচ্ছাসেবীদের আক্রমণ ও হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (৮-এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ কামরান হোসেন বেনারকে বলেন, “ক্যাম্পে মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) ও স্বেচ্ছাসেবীদের কারণে অপরাধীদের কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যে কারণে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালাচ্ছে। অনেক মাঝি শুধু অপরাধীদের অবস্থানের তথ্য দেওয়ার কারণেও আক্রান্ত হচ্ছেন।”
“এসব ঘটনার সাথে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। ক্যাম্প এলাকায় টহল এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে,” উল্লেখ করে তিনি জানান, ৮-এপিবিএন এর আওতাধীন ক্যাম্পগুলোতে প্রতি রাতে প্রায় চার হাজার স্বেচ্ছাসেবী রোহিঙ্গা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
এ ছাড়া ১৪-এপিবিএনের অধীনে তিন হাজার ৫১৬ জন এবং ১৬-এপিবিএনের অধীনে তিন হাজার সাতশ স্বেচ্ছাসেবক একই কাজ করছেন।
“নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের মেরে ফেলা শুরু হলে এটা কিন্তু তাদের ভয়াবহ ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়ার সামিল। এর দায়বদ্ধতা কিছুটা সরকারের ওপরও বর্তাবে। অপরাধীদের কাছে তারা এখন চিহ্নিত শত্রু। এটা ভাবা দরকার,” বেনারকে বলেন অভিবাসন বিষয়ক বিশ্লেষক আসিফ মুনীর।
তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শিবিরে আমি এমন অনেক তরুণের কথাও জানি, যারা বেশিরভাগ সময়ই রাতে নিজেদের ঘরে থাকছে না। কারণ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের যোগদানের জন্য চাপ বা হুমকি দিতে পারে।”
করোনা মহামারিকালে শরণার্থী শিবির এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর শিথিলতার সুযোগে সশস্ত্র অপরাধীরা নিজেদের অবস্থান পোক্ত করেছ বলেও অভিমত এই বিশ্লেষকের।
‘লাশও মিলবে না’
রোহিঙ্গাদের মাঝে ‘আল-ইয়াকিন’ নামে সমধিক পরিচিত আরসার দেওয়া হত্যার হুমকি মাথায় নিয়েই লম্বাশিয়া শিবিরে বসে বেনারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মুহিব উল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ-এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ জুবায়ের।
নিজে এবং পরিবারের সদস্যরা চরম শঙ্কায় আছেন জানিয়ে ৬২ বছর বয়সী এই রোহিঙ্গা নেতা বলেন, “তারা (আরসা) বলেছে মুহিব উল্লাহর লাশ পাওয়া গেছে, জুবায়েরের লাশও মিলবে না।”
মালয়েশিয়ান একটি মোবাইল নম্বর থেকেও তাঁর মোবাইলে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা বলেছে, এখানে (ক্যাম্পে) আরসা ছাড়া কোনো সংগঠনের নেতা থাকবে না। প্রত্যাবাসনের কথা বললেই শেষ করে দেওয়া হবে।”
“তারা ২০১৯ সালের ১৮ আগস্ট আমাকে এখান (লম্বাশিয়া) থেকে ধরে সিএনজিতে (অটোরিকশায়) করে বালুখালী আট নম্বর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে মারা গেছে যে হাশিম (গত নভেম্বরে নিহত আরসার কথিত সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মোহাম্মদ হাশিম), সে আমার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে বলে, আজই মেরে ফেলব,” বলেন জুবায়ের।
বিষয়টি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) সুরক্ষা কর্মকর্তাকে জানানোর পর তাৎক্ষণিকভাবে জুবায়েরকে বালুখালীর ট্রানজিট সেন্টারে স্থানান্তর করেন। পরবর্তীতে তাঁকে না পেয়ে তাঁর ছেলেকেও জবাই করার চেষ্টা করেছিল আরসা সদস্যরা। এখনো তারা সবসময় জুবায়েরকে হত্যার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
২০১৭ সালের নভেম্বরে সংগঠিত হওয়ার পর থেকেই এআরএসপিএইচ-এর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসা জুবায়ের জানান, রাখাইনে থাকতে বিনামূল্যে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কারণে রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এন্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি নামের একটি দলের মংডু এলাকার সাধারণ সম্পাদকের থাকাকালীন নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। নিজের পরিবারের সদস্যদের জীবন শঙ্কায় রয়েছে জানিয়ে গত মাসেও সার্বিক পরিস্থিতি উল্লেখ করে ইউএনএইচসিআরকে একটি চিঠি দিয়েছেন তিনি। ওই চিঠির একটি কপি বেনারের হাতে রয়েছে।
আতঙ্কে খ্রিস্টান রোহিঙ্গারাও
নিজেদের সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে ইউএনএইচসিআর সুরক্ষা কর্মকর্তার কাছে সাহায্য চেয়েছে ২০২০ সালে ২৭ জানুয়ারি থেকে ট্রানজিট সেন্টারে আশ্রিত খ্রিস্টান রোহিঙ্গারাও।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের খ্রিস্টান পাড়ায় আরসা হামলা চালানোর পরদিনই আক্রান্তদের ট্রানজিট সেন্টারে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই আছেন ১৭টি খ্রিস্টান পরিবারের ৭৬ জন রোহিঙ্গা।
পরবর্তীতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও ইউএনএইচসিআর তাদের ঘরগুলো পুনর্নির্মাণ করে দিলেও তাঁরা নিরাপত্তার অভাবে সেখানে ফিরে যাননি বলে বেনারকে জানান ভুক্তভোগী খ্রিস্টান খ্রিস্টান যুবক সাইফুল ইসলাম পিটার।
সুরক্ষা কর্মকর্তার সাহায্য চেয়ে করা জুবায়ের ও খ্রিস্টানদের আবেদনের ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের মুখপাত্র রেজিনা দে লা পোর্টিলা বেনারকে বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা খ্রিস্টানদের ধারাবাহিকভাবে সাহায্য করে আসছে, ঠিক যেভাবে সংস্থাটি সব শরণার্থীকে সাহায্য করে,” বলেন তিনি।
রেজিনা আরো বলেন, “বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশেপাশে বসবাসরত বাংলাদেশীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ।”
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা নয়ন বেনারকে বলেন, “ক্যাম্পের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেবিষয়ে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সবসময়ই সর্তক থাকতে বলা হয়।”
“বিশেষ করে মুহিব উল্লাহ হত্যার পর থেকে রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বহুগুণ বেড়েছে। নিরলসভাবে কাজ করছে তারা,” বলেন এই কর্মকর্তা।
গত পাঁচ বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে ১২১ জন রোহিঙ্গা খুন হয়েছেন এবং মুহিব উল্লাহ হত্যার পর বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৪১৪ জন ‘কথিত আরসা’ সদস্যকে আটক করা হয়েছে বলে বেনারকে নিশ্চিত করেছে এপিবিএন।
শিক্ষকরা লক্ষ্য হচ্ছেন
শিক্ষকরা জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বলে রোহিঙ্গা নেতাদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও হুমকির মুখে রেখেছে আরসা।
শিক্ষকতার কারণেই রাখাইন ছেড়ে আসতে হয়েছে বালুখালীর ১৮ নম্বর ক্যাম্পে সপরিবারে বসবাসকারী রহমত উল্লাহকে। এখানেও একই কারণে অপহরণ ও হত্যার চেষ্টা সামলাতে হয়েছে, বেনারকে জানান নিরাপত্তা স্বেচ্ছাসেবী মোহাম্মদ হারুন।
আরসা ও রোহিঙ্গা অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সোচ্চার হারুন বর্তমানে নিরাপত্তা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সক্রিয় আছেন। তিনি বলেন, “সব সময়ই সতর্ক থাকতে হয় আমাদের।”
এদিকে রোহিঙ্গা শিবিরে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় থাকলেও “গতানুগতিক পুলিশিং সেখানে কাজ করবে না। এটার জন্য আলাদা করে ভাবতে হবে,” বলে বেনারকে জানান নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক।
কীভাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো জাতীয় কর্মপরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ক্যাম্পে সুবিধাভোগী ও সুবিধাবঞ্চিত রোহিঙ্গাদের মধ্যেও এক ধরনের সাংঘর্ষিক অবস্থান আছে। অনেক রোহিঙ্গা মনে করেন তারা রাখাইনের চেয়ে এখানেই ভালো আছে। আবার অবস্থাসম্পন্ন শিক্ষিত রোহিঙ্গারা মনে করে তারা ফিরে গেলেই ভালো থাকবে।”
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপকের মতে, শিবিরগুলোতে “জেলা পুলিশ, এপিবিএনসহ অন্যান্য বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করছে না। তাদের আন্তঃযোগাযোগে ঘাটতি রয়েছে।
কী চায় আরসা?
রোহিঙ্গা নেতা জুবায়ের ও স্বেচ্ছাসেবক হারুন বেনারকে জানান, শুরুতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন পেলেও ২০১৭ সালের পরে আরসার সেই অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। তবে আরসা ও অপরাধীচক্রগুলোর কর্মকাণ্ডের কারণে রোহিঙ্গারা উগ্রপন্থী অপরাধপ্রবণ জাতি হিসেবেও পরিচিতি পাচ্ছে, যা তাদের বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদকারী মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অবস্থানকে পোক্ত করছে।
রোহিঙ্গা গোষ্ঠীর মধ্যে একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য আরসার চেষ্টার আর্থিক যোগও আছে বলে উল্লেখ করেন বিশ্লেষকরা।
ড. উমরের মতে, রাখাইনে ফিরে যেতে হলে শিবিরে অবস্থান পোক্তকারী অপরাধীদের নানা অবৈধ ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরণের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এটাও প্রত্যাবাসন প্রত্যাশীদের ওপর তাদের আক্রোশের অন্যতম কারণ।