দেশহীন শরণার্থী রোহিঙ্গা শিশুরা
2018.01.11
কক্সবাজার
নিজের পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা শিবিরে একেবারে উদাস চোখে তাকিয়ে থাকে ১৫ বছরের কিশোরী ইয়াসমিন।
“প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে আছে মেয়েটা,” নির্বাক ইয়াসমিনের পক্ষে বেনারকে বলেন আরেক শরণার্থী নারী রাশিদা বেগম (৫০)।
উদ্বাস্তু জীবনে পিতৃ-মাতৃহীন ইয়াসমিনের বর্তমান অভিভাবক রাশিদা ছিলেন মিয়ানমারে তার প্রতিবেশী।
রাশিদা জানান, আগস্টের ২৫ তারিখ রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মিয়ানমার পুলিশের কয়েকটি ফাড়িতে হামলার পর যখন দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা গ্রামে সহিংস অভিযান শুরু করে তখন ইয়াসমিন নিজের চোখে তার বাবা, মা ও ভাইকে হত্যার ঘটনা দেখেছে।
কক্সবাজারের প্রতিটি শরণার্থী শিবিরেই ইয়াসমিনের মতো অংসখ্য ভীত ও আতঙ্কিত রোহিঙ্গা শিশুরা বাসবাস করছে। তারা সহিংসতা থেকে বাঁচতে পারলেও চোখের সামনে স্বজনদের হত্যার ঘটনা কোনোভাবে ভুলতে পারছে না।
গত আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যের সহিংসতায় এখন পযর্ন্ত সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মতে, নতুন আসা শরণার্থীদের অন্তত ৬০ ভাগই শিশু। মোট সাড়ে তিন লাখের মতো শরণার্থী শিশুদের মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার সহিংসতায় তাদের বাবা, মা অথবা দু'জনকেই হারিয়েছে।
ইউনিসেফের মতে, পাঁচ বছরের কম বয়েসি অন্তত ২০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু বিভিন্নভাবে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
শরণার্থী শিশুদের ভয় ও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে কয়েক শ শিশু কেন্দ্র চালু করা হয়েছে বলে বেনারকে জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন।
“নাচ, গান এবং অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করছি তাদের মন থেকে ভয়াবহ স্মৃতিগুলো মুছে দিতে,” বেনারকে বলেন ইউনিসেফের মুখপাত্র ফারিয়া সেলিম।
কক্সবাজার থেকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন তুষার তুহিন ও আবদুর রহমান।