রোহিঙ্গাদের ঈদ: শিশুদের আনন্দ, বড়দের বিষাদ

শরীফ খিয়াম
2018.08.22
কক্সবাজার
SS00_cover_1000.jpg

ঈদ উপলক্ষে কেনা খেলনা বন্দুক হাতে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের এক রোহিঙ্গা শিশু। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS01_1000.jpg

কুতুপালংয়ে ঈদের সাজে এক রোহিঙ্গা কিশোরী। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS02_1000.jpg

কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে ঈদের দিন বেড়াতে বেরিয়েছে রোহিঙ্গা কিশোরেরা। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS03_1000.jpg

কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা কিশোরীদের ঈদ বেড়ানো। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS04_1000.jpg

কুতুপালং শিবিরে নাগরদোলায় চড়ে আনন্দিত তিন রোহিঙ্গা শিশু। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS05_1000.jpg

ছোট বোনকে কোলে নিয়ে কুতুপালংয়ের ঈদ মেলায় নাগরদোলার পাশে এক রোহিঙ্গা কিশোরী । ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS06_1000.jpg

কুতুপালংয়ের ঈদ মেলায় বাংলাদেশি টাকা হাতে এক রোহিঙ্গা কিশোর । ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS07_1000.jpg

অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে ঈদের দিন শরণার্থী শিবিরে পুলিশী টহল। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS08_1000.jpg

উখিয়ার কুতুপালংয়ের একটি মসজিদে ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করছেন এক রোহিঙ্গা। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS09_1000.jpg

ঈদের দুপুরে কুতুপালং শিবিরের রাস্তায় এক রোহিঙ্গা নারী। ২২ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

SS010_1000.jpg

রাখাইনে চোখের সামনে একমাত্র ছেলে আর দুই নাতিকে খুন হতে দেখা রোহিঙ্গা আমির আলীর ঈদ শুধুই এক দুঃখের স্মৃতি। ২১ আগস্ট ২০১৮। শরীফ খিয়াম/বেনারনিউজ

গত বছর যাদেরকে নিয়ে রোহিঙ্গারা কোরবানি ঈদ করেছিলেন, এবার তাঁরা অনেকেই শুধু স্মৃতি। তাই অনেক রোহিঙ্গাই শরণার্থী জীবনের প্রথম কোরবানি ঈদ কাটিয়েছেন বিষাদের মাঝে।

“গত কোরবানির দিনেই আমার ‍দুই ছেলে ও দুই নাতিকে আমার সামনে গুলি করে হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনারা,” বেনারকে জানান টেকনাফের জাদিমুরা রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা মরিয়ম বেগম।

মংডুর সাপবাজার থেকে বাংলাদেশে আসার আগে চোখের সামনে একমাত্র ছেলে আর দুই নাতিকে খুন হতে দেখেছেন ৭০ বছর বয়সী আমির আলী। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি উল্টো জিজ্ঞেস করেন, “আমার কোনো পরিবার নেই। আমি কার সঙ্গে ঈদ করব?”

গত কোরবানি ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী সংগঠন আরসা রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলা চালায়। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক নিপীড়নমূলক অভিযান শুরু করে। এর ফলে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

শরণার্থী জীবনে “টাকা-পয়সা নাই, চলাফেরার সুযোগ নাই,” মন্তব্য করে মংডু থেকে আসা আবুল কালাম (৪৪) বলেন, “আমরা দেশে যেভাবে ঈদ করতাম, এখানে সেভাবে ঈদ করতে পারিনি। কারণ সবকিছুর পরও এটা আমাদের দেশ না। এই জন্য আমাদের কোনও আনন্দ নেই।”

তবে ঈদের দিন উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন শিবির ঘুরে দেখা যায় শিশুরা সকাল থেকেই সেজেগুজে, নতুন জামা-কাপড় পরে ক্যাম্পের রাস্তায় হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দে মেতে উঠেছে।

রোহিঙ্গা শিশু খায়রুল (১২) ও রুহুল (১০) বেনারকে জানায়, তারা আজ সারাদিন ঘুরে বেড়াবে। আইসক্রিম আর চকলেট খাবে।

শিশুদের জন্য কুতুপালংয়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় নাগরদোলা, চড়কিসহ মিনি মেলা বসেছে। এর আয়োজক হাসেম (৩৫) জানান, এই মেলা কমপক্ষে তিন দিন থাকবে।

কোরবানি উপলক্ষে সরকারি উদ্যোগে শিবিরগুলোতে কয়েক হাজার গরু জবাই হলেও টার্গেটের তুলনায় তা কম ছিল বলে জানান উখিয়ার ইউএনও নিকারুজ্জামান। তবে আরো গরু আসার কথা রয়েছে বলে “আমরা নিরাশ হচ্ছি না” মন্তব্য করে তিনি বলেন, মাংসের সাথে চাল, ডাল, তেল- মশলাও বিতরণ করা হবে।

বুধবার সকালে রোহিঙ্গা শিবিরে কমপক্ষে নয়শ মসজিদে ঈদের নামাজ হয়েছে বলে বেনারকে জানান কুতুপালং এক নম্বর ক্যাম্পের একটি মসজিদের ইমাম মৌলভি কাইয়ুম।

টেকনাফ থেকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন আবদুর রহমান।

মন্তব্য করুন

নীচের ফর্মে আপনার মন্তব্য যোগ করে টেক্সট লিখুন। একজন মডারেটর মন্তব্য সমূহ এপ্রুভ করে থাকেন এবং সঠিক সংবাদর নীতিমালা অনুসারে এডিট করে থাকেন। সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য প্রকাশ হয় না, প্রকাশিত কোনো মতামতের জন্য সঠিক সংবাদ দায়ী নয়। অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন এবং বিষয় বস্তুর প্রতি আবদ্ধ থাকুন।